বিএনপিকে দুর্নীতিবাজ বলার আগে নিজের চেহারা দেখুন : ফখরুল

বিএনপি দুর্নীতিকে নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার সমালোচনা করেছে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপিকে দুর্নীতিবাজ বলার আগে নিজের চেহারা দেখার পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতিকে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনায় এ কথা বলেন ফখরুল। বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মু্ক্তির দাবিতে এই আলোচনার আয়োজন করে গণতান্ত্রিক অধিকার মঞ্চ নামে একটি সংগঠন।

এ সময় বুধবার সংসদের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপি নেতা।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হওয়ার পর বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন করেছে তারেক রহমানকে। খালেদা জিয়াকে যে মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে, একই মামলায় তার সাজা হয়েছে ১০ বছরের। বিদেশে অর্থপাচারের আরেকটি মামলায় তার সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ কোটি টাকা জরিমানাও হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন, বিএনপি কেন দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত একজনকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন করেছে। এর পাশাপাশি দলের গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা তুলে দিয়ে আদালতে দণ্ডিতদের দলের সদস্যপদ হতে প্রতিবন্ধকতা তুলে দেয়ার সমালোচনা করেনে প্রধানমন্ত্রী। বলেন, বিএনপি এখন দুর্নীতিকেই নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছে।

বিএনপির শীর্ষস্থানীয় প্রায় সব নেতাই দুর্নীতির মামলার আসামি বলেও জানান শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর এসব বক্তব্যের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘বিএনপিকে দুর্নীতিপরায়ণ বলার আগে নিজেদের তো আয়নায় চেহারা দেখা উচিত। আপনারা কী সেটা আগে চিন্তা করেন কাউকে অপবাদ দেয়ার আগে। প্রবীণ সাংবাদিক এ বি এম মূসাই বলেছিলেন আওয়ামী লীগকে দেখলেই বলবা চোর চোর।’

খালেদা জিয়াকে ‘মিথ্যা মামলায়’ অন্যায়ভাবে কারাবন্দী করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল। বলেন, ‘তার আইনি ও গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে তিন পর্যন্ত তাকে ডিভিশন দেয়া হয়নি। এখন তার জামিনও বিলম্বিত করা হচ্ছে।’

খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে, মানুষের ‘গণতান্ত্রিক ও ভোটের অধিকার’ ফিরিয়ে আনতে আন্দোলন করতে হবে জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করব।’

‘রাজপথে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে হবে। যে দানব আজ চেপে বসেছে তাকে ঐক্যবদ্ধভাবে পরাজিত করতে হবে।’

বর্তমান সংসদের সমালোচনা করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘এখন যে পার্লামেন্ট আছে তাতে জনগণের প্রতিনিধিত্ব নেই। তথাকথিত বিরোধী দলও এখন বলে আমাদের বাঁচান। আমরা কারো কাছে পরিচয় দিতে পারি না। লজ্জায় সাংবাদিকদের কাছে সাক্ষাতকার দেই না। এ সংসদকে আমরা কখনও জনগণের সংসদ মনে করি না।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সাবেক এমপি ও স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ।