বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারীর ব্যক্তিগত জীবন কেমন?

তিনি সুপার মার্কেটে বাজার করেন। নাপিতের দোকানে অন্যদের পাশে বসে অপেক্ষা করেন।

এমনকি সরকারি ভবন নয়, নিজের বাড়িতে থাকাই তার পছন্দ। তিনি আর কেউ নন, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল।

২০১৫ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী আঙ্গেলা মার্কেল। উডো ভালৎস গত ১০ বছর ধরে ম্যার্কেলের চুল কাটেন। তার কথায়, চ্যান্সেলার হওয়ার আগেও তিনি যেমন সেলুনে অন্যদের সঙ্গে বসতেন, এখনও তাই করেন। তাকে কোনও বিশেষ ছাড় দেওয়া হয় না। অর্থাৎ তিনিও অন্যদের মতো ৬৫ ইউরো দেন। একদম আগের মতো আছেন তিনি।

বার্লিনের ‘মিউজিয়াম আইল্যান্ড’র একটি জাদুঘরের কাছে নিজস্ব, কিন্তু পুরানো একটা ফ্ল্যাটে থাকেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও তার স্বামী ইওয়াখিম সাউয়ার।

শুধু নিরাপত্তার জন্য দু’জন পুলিশ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। এছাড়া কিন্তু সব কিছু আগের মতো আছে। এই যেমন, ছুটি পেলে আজও কাছের উকারমার্ক নামের ছোট্ট শহরে চলে যান দু’জনে। সেখানেই তিনি বড় হয়েছেন!

চ্যান্সেলার ম্যার্কেল সাধারণ সুপার মার্কেটেই বাজার করতে যান। বিশেষ করে যেগুলো একটু বেশি সময় খোলা থাকে। বাজার করা সম্পর্কে আঙ্গেলা ম্যার্কেল একবার এক দোকানিকে বলেছিলেন, আমার এই অল্প অবসর সময়ে বাজার করার মত সব কাজই করার চেষ্টা করি, যেমনটা আগে করতাম। অবশ্য যখন নিজে পারি না, তখন বাজারের লিস্ট তৈরি করে স্বামীর হাতে তুলে দিই।

দোকানের একজন নারী কর্মী জানান, চ্যান্সেলার ম্যার্কেল অন্যান্য ক্রেতার মতোই কিছু খুঁজে না পেলে কোথায় কী রাখা আছে, তা সাধারণ গৃহিণীদের মতোই জানতে চান। তার নিরাপত্তার জন্য দেহরক্ষী সঙ্গে না থাকলে কেউ হয়ত বুঝবেই না যে তিনিই আমাদের ‘অ্যাঞ্জি’। কর্মীটি আরও জানান, শত ব্যস্ততার মধ্যেও কিন্তু চ্যান্সেলারের মুখে হাসিটুকু লেগে থাকে, যা ভীষণ ভালো লাগে।

জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেলের ভীষণ পছন্দ ফ্রেঞ্চ চিজ বা পনির, যা তিনি নিজেই কিনতে ভালোবাসেন। আর সেই কথাই গর্ব করে জানান ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের একজন কর্মী।

হাতে দামী ব্যাগ নেওয়ার চেয়ে ভালো খাওয়া-দাওয়া ম্যার্কেলের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যখন তিনি রান্না করার সময় পান না, তখন স্বামী ইওয়াখিম সাউয়ারকে নিয়ে বার্লিনের ‘কাসামবালিস’ নামের একটি রেস্তোরাঁয় খেতে যান। দামি খাবারের চেয়ে অবশ্য ‘গ্রিক মিটবল’-এর মতো সাধারণ খাবারই বেশি পছন্দ বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর এই নারীর।

অন্যান্য রাজনীতিকদের মতো বিলাসিতা আঙ্গেলা ম্যার্কেলের তেমন পছন্দ নয়। বরং সাধারণ জীবনযাপনই তার বেশি ভালো লাগে। তাই তিনি যতটা সম্ভব সেভাবেই চলার চেষ্টা করেন স্বামীকে নিয়ে।

আঙ্গেলা ম্যার্কেল সময় সুযোগ পেলে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে হাঁটতে বের হন। শারীরিক এবং মানসিকভাবে ‘ফিট’ থাকতে মুক্ত বাতাসে হাঁটা-চলা যে ভীষণ জরুরি, সেটা তিনি যেন সকলকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। এই না হলে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী!