মাদক সুনামির মতো ছড়িয়ে পড়েছে : ওবায়দুল কাদের

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মাদক দেশের সর্বত্র সুনামির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের এমন কোন গ্রাম নেই যেখানে মাদক ছড়িয়ে যায়নি। এই মাদক আমাদের তরুণ সমাজের একটা বড় অংশকে গ্রাস করেছে। এ থেকে বাঁচতে শেখ হাসিনা সরকার নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তবে এ ব্যাপারে রাজনৈতিক নেতাদেরও ভূমিকা রয়েছে। আপনাদের শুধু রাজনৈতিক বক্তব্য দিলে চলবে না, এসব বিষয়ে এলাকায় সচেতনতা বাড়াতে হবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনের এমপি নুরজাহান বেগমের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। ড্রাইভাররা মাদক নিয়ে গাড়ি চালায়, লাইসেন্স দেবার সময় এদের রক্ত পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, লাইসেন্স প্রার্থীদের রক্ত পরীক্ষার প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা একজন চালক যদি কোন প্রকার বিরতি ছাড়াই ২৪ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় গাড়ি চালায় তাহলে তার দুর্ঘটনায় পতিত হবার আশঙ্কা থাকে। সে কারণে আমরা ড্রাইভারদের কাউন্সেলিং করার পরিকল্পনা নিয়েছি। বেসরকারি মালিকদেরও বলেছি তারা যেন তাদের গাড়ির চালকদের কাউন্সেলিং করেন। তবে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেবার সময় রক্ত পরীক্ষার বিষয়টি আমরা চিন্তাভাবনা করব বলে জানান মন্ত্রী।

দেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার হ্রাস পেয়েছে
এমপি হাবিবুর রহমানের (বগুড়া-৫)লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশনের ২০১৪ সালে প্রকাশিত ‘রোড ট্রাফিক অ্যাক্সিডেন্ট ডেথ রেট বাই কান্ট্রি’এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, পৃথিবীর ১৭২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৯তম। আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনা এবং দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর হার পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়ে কম। এমনকি ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, চীন, থাইল্যান্ড, রাশিয়া, মালয়েশিয়া এবং শ্রীলঙ্কার তুলনায় কম। সংস্থাটির ২০১১ সালের রিপোর্টে বাংলাদেশের স্থান ছিল ৯০তম। এ থেকে বোঝা যায় দেশে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস পেয়েছে। মন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার কমাতে ও চালকদের মান বাড়াতে যাত্রী, চালক, মালিক ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

নরসিংদী-২ আসনের এমপি কামরুল আশরাফ খানের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, পুলিশ বিভাগের সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য অনুসারে, প্রতি ১০ হাজার যানবাহনে মৃত্যুর হার ২০১১ সালে ১৫ দশমিক ১২, ২০১২ সালে ১৩ দশমিক ৭৬, ২০১৩ সালে ৯ দশমিক ৮৮, ২০১৪ সালে ৯ দশমিক ৬৫, ২০১৫ সালে ৯ দশমিক ৬৫ এবং ২০১৬ সালে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ, যা থেকে বোঝা যায় দেশে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস পেয়েছে।

‘এসডিজি-২০৩০ এবং ইউএস ডিকেড অব একসান ফর রোড সেফটি ২০১১-২০২০’এর লক্ষ্য অর্জন অর্থাৎ ২০২০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার হার ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনতে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বলে তিনি জানান।