‘মানুষ অনাহারে মারা যাচ্ছে, এমন খবর কিন্তু পত্রিকায় নেই’

খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, আজকে আমরা বলতে পারি, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তা দিতে আমরা সক্ষম হয়েছি। এখন উত্তরবঙ্গে মঙ্গা নেই। মানুষ ক্ষুধায় কাতরাচ্ছে কিংবা অনাহারে মারা যাচ্ছে, এমন খবর কিন্তু আজকে পত্রিকায় নেই।

বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে দেশইনফো.কম.বিডি এবং ওয়াচডগ আয়োজিত ‘খাদ্যে ভেজালবিরোধী অভিযান : প্রাতিষ্ঠানিক সংকট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

কামরুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রথম যে কাজটি করতে হয়েছে তা হলো খাদ্যের নিশ্চয়তা বিধান করা। বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিল, আমরা সবসময় বিদেশের ওপর নির্ভর ছিলাম। আমাদের একসময় অর্থমন্ত্রী সংসদে বলেছিলেন, ‘খাদ্য ঘাটতি যদি না থাকে, সংকট যদি না থাকে তাহলে বিদেশ থেকে সাহায্য পাওয়া যায় না।’ এরকম একটা মানসিকতা ছিল আমাদের। সেই মানসিকতার মধ্য দিয়েই আমাদের প্রধানমন্ত্রী ৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসেন তখন ৪০ লাখ টন খাদ্য ঘাটতি নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। ২০০১ সালে আমরা ১৬ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত রেখে এসেছিলাম। ২০০৬ সালে আবার আমরা যখন যাত্রা শুরু করি তখন ২৬ লাখ টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। এই হচ্ছে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার অবস্থা। মানুষের আজকে উপার্জন বেড়েছে, চাহিদা বেড়েছে, রুচি বেড়েছে। এটা আজকে স্বীকার করতে হবে, মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তা দিতে প্রধানমন্ত্রী সক্ষম হয়েছেন।

মন্ত্রী বলেন, ৪৮ বছরে বাংলাদেশে এই প্রথম আমাদের প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালে নিরাপদ খাদ্য আইন করেন। ২০১৫ সালে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠন করেন। দীর্ঘদিন পর আমরা নিরাপদ খাদ্যের যে সাংবিধানিক অধিকার তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি। জাতির জনককে হত্যা করার পর থেকে যারা দেশ শাসন করেছেন এটা তাদের ব্যর্থতা, এই কথাটা আমাদের স্বীকার করতেই হবে। আমাদের জন্য নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তির যে সাংবিধানিক অধিকার, এটা নিশ্চিত করার জন্য কোনো সরকার কোনো কাজ করে নাই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই কাজটিতে হাত দিয়েছেন। ৪৫ বছর পর আমরা এই কাজটিতে হাত দিয়েছি, আমরা কাজটি করছি ৩ বছর যাবত।

নিরাপদ খাদ্য আইনটি যুক্তরাষ্ট্র, শ্রীলংকাসহ বিভিন্ন দেশের আইনের আদলে তৈরি করা হয়েছে এমন দাবি করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সেসব দেশেও এসব আইন বাস্তবায়ন করতে ৬-৭ বছর সময় লেগেছে। আমরা সবেমাত্র যাত্রা শুরু করেছি, এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। আমরা আশা করি, সেসব দেশে যে পরিমাণ সময় লেগেছে তার আগেই আমরা এই আইন বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবো। আজকে এই আইন বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন জনসচেতনতা। সচেতনতা তৈরি করতে না পারলে খাদ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন না।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক, বিএসটিআইয়ের সহকারী পরিচালক রিয়াজুল হক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (তদন্ত) মাসুম আরেফিন, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আবু নাসের খান প্রমুখ।