প্রতিরোধের অভাবে ভেসে বেড়াচ্ছে ভেজাল খাদ্য; বাড়ছে অকালমৃত্যু

মানুষ যদি বেঁচে নাই থাকে, তাহলে সব উন্নয়নের সফলতাও চূর্ণ হয়ে যায়। ভেজাল খাদ্য অকাল মৃত্যুর কারণ সবসময়। অথচ সমাজ থেকে ভেজাল নামক শব্দটা প্রতিরোধের মুখে না ঠেকে দিন দিন ভেজাল জিনিসই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

দেশে অনেকদিন ধরেই আর্থিক সঙ্কটসহ বিভিন্ন সঙ্কটের পাশাপাশি অন্যতম দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ পুরোপুরিভাবে ভেঙে পড়েছে। চাহিদা থাকলেও দামের বৃদ্ধিতে সবকিছুই কমে এসেছে মানুষের খাদ্যগ্রহণও।

শুধু তাই—ই নয় যার অন্যতম কারণ হিসেবে আমরা উপলব্ধি করেছি। আমরা দেখেছি দেশে নানা সঙ্কটের মধ্যে জীবনযাপন করছে মানুষ। তারপরও জীবনের গ্যারান্টি নেই এক মুহূর্তের জন্য। অবশ্য প্রকৃতঅর্থে ধর্মীয় অনুসারে আমাদের জীবন এমনিতেই যখন তখন মৃত্যু হওয়ার নিয়ম রয়েছে আল্লাহতায়ালার। তারপরও দেশে প্রথম বড় বিপদ ‘ভেজাল’ খাদ্য। দেশের এ রাজকতার মধ্যেদিয়ে ব্যবসায়ীরা ব্যবসায়নীতি হারিয়ে ডাকাতের মতো ব্যবসা করে চলেছে। সরকারের নির্ধারিত মূল্য তো মানেই না বরং খাদ্যদ্রব্য সব ধরনের জিনিসে ভেজাল ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট থাকছে না। চারিদিকে যেমন মানুষ ভেজাল তেমনী ভেজাল জিনিসপত্র খেয়ে অকাল মৃত্যুর দরজায় টেনে নিয়ে যাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। অথচ সরকারের দেশের জন্য যেসব জনস্বার্থে কাজ করা উচিত—তার কোনোটাই দেখা যায় না ঠিকমতো। রাজনীতির প্রেক্ষাপট অনুযায়ী আমাদের দেশের কোনো সরকারের ওপরই আস্থা নেই জনগণের। সমাজের মানুষ কিভাবে আছে জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে আছে কীনা। বাজারে ভেজাল খাদ্য বিক্রি হচ্ছে কীনা—সেব্যাপারেও সরকারের কোনো মহত্মতা নেই।
এককথায় বলতে গেলে বলা যেতেই পারে, জাতির ওপর সরকারের কোনো ধরনের মায়া মহব্বত নেই।

এ কথা বললেও যেনো ভুল হয়ে যায়। কারণ প্রতিটা রাষ্ট্রের জনগণই সরকারকে ক্ষমতায় আনে। সেইসূত্রে সরকার জনগণের সার্বিক ভালোমন্দের দায়িত্ব নিতেও বাধ্য। তারপরও আমরা সরকার পক্ষ থেকে কি কি সুবিধা পাওয়ার কথা আর কি কি সুবিধা আমরা পাচ্ছি। এদিক ভাবতে গেলে দেখা যাবে, সরকার থেকে আমরা তুলনামূলক সুযোগ সুবিধা ও সুষ্ঠু সমাজ গঠনে জিরো হয়ে রয়েছি। অথচ একটা রাষ্ট্রের সরকার মানে সর্ব অভিভাবক। কিন্তু অভিভাবকের আচরণে আমরা বারবারই ব্যর্থ হচ্ছি সরকার থেকে।

তাই বাধ্যহয়েই মৃত্যুকে ডেকে আনছি বারবার। সেই ভেজাল খাদ্য খেয়ে শিশু থেকে শুরু বয়োঃবৃদ্ধ পর্যন্ত অকাল মৃত্যু হচ্ছে। অথচ ভেজাল প্রতিরোধে সরকারের কোনো সদইচ্ছাই নেই। শুধু মুখেই প্রতিরোধের কথা জড়িয়ে থাকে। বাস্তবে কোনো প্রতিকার দেখতে পাচ্ছি না আমরা। আর সে কারণেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে মানবতাহীন ব্যবসায়নীতি হারানো অসাধু ব্যবসায়ীরা। িকিন্তু ওইসকল অসাধু ব্যবসায়ীদের কঠোর শাস্তির বিধান থাকলেও কোনোপ্রকার শাস্তি হচ্ছে না। আর সে কারণেই দিন দিন ভেজাল খাদ্য ভেসে বেড়াচ্ছে প্রতিটি বাজারে। যাই খাই না কেনো সে জিনিসেই ভেজাল ছাড়া আশা করা অসম্ভব ব্যাপার। যে কারণে মানুষ ১০টি রোগে অকাল মৃত্যুর যাত্রী হয়ে পড়ছে।

সে আলোকে ২০২৩ সালে হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন ১ হাজারে ১ দশমিক শূন্য ২ মারা গেছেন।
২০২২ সালে হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন ১ হাজারে ১ দশমিক শূন্য ২ মারা গেছেন।

২০২১ সালে এ সংখ্যা ছিলো ১ দশমিক শূন্য ২ জন।
ব্রেনস্ট্রোকে মারা গেছেন ০ দশমিক ৬৪ জন। এর আগের বছরে এ সংখ্যা ছিলো ০ দশমিক ৫৩ জন।
২০২৩ সালে শ্বাসতন্ত্র রোগে মারা গেছেন শূন্য দশমিক ৫৭ জন। এর আগের বছর মারা গেছে ০ দশমিক ৫৬ জন। যকৃতের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ০ শূন্য দশমিক ২৭ জন। ২০২২ সালে মারা গেছেন ০ দশমিক ২৩ জন। ২০২১ সালে মারা গেছেন ০ দশমিক ২১ জন। অ্যাজমা আক্রান্ত হয়ে ২০২৩ সালে মারা গেছেন ০ দশমিক ২৭ জন। এর আগের বছর মারা গেছেন ০ দশমিক ২৮ জন। ২০২১ সালে মারা গেছেন ০ দশমিক ২৯ জন। সাধারণ জ্বরে গত বছর মারা গেছেন ০ দশমিক ২৩ জন।

২০২২ সালে মারা গেছেন ০ দশমিক ২৭ জন। উচ্চ রক্তচাপে গত বছর মারা গেছেন ০ দশমিক ২২ জন। ২০২২ সালে মারা গেছেন ০ দশমিক ১৯ জন। নিউমোনিয়ায় গত বছর মারা গেছেন ০ দশমিক ২২ জন। ২০২২ সালে মৃত্যুর হার একই রকম ছিলো। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গত বছর মারা গেছেন ০ দশমিক ২১ জন। ২০২২ সালে মৃত্যুর হার একই ছিলো। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে ২০২৩ সালে মারা গেছেন ০ দশমিক ২১ জন। ২০২২ সালে মারা গেছেন ০ দশমিক ১৮ জন।

বিবিএসের পক্ষ থেকে বলছে. ২০২২ সালে দেশে এক বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুহার ছিলো হাজারে ২৫ জন। যা ২০২৩ সালে বেড়ে হয়েছে ২৭ জন। পাঁচ বছর আগে এই সংখ্যা ছিলো ২১ জন। আবার এক মাসের কম বয়সী নবজাতকের মৃত্যুহার হঠাৎ বেড়ে গেছে।