মৃত্যু নিশ্চিত, সময়টা শুধু অনিশ্চিত : গণপূর্তমন্ত্রী

গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, হিংসা বিদ্বেষ পরিহার করে আমাদের মানব জীবন গঠন করা উচিত। সকলের মধ্যে সহমর্মিতা, ভ্রাতিত্ব, আন্তরিকতার একটি নিবিড় বন্ধন গড়ে তুলতে হবে। কেননা এই পৃথিবীতে রক্তমাংসের দেহ নশ্বর, কীর্তিটাই অবিনশ্বর। সেটাই আমাদের গড়ে তুলতে হবে।

রোববার সন্ধায় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে দক্ষিণবঙ্গ আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমানের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। দক্ষিণবঙ্গ আইনজীবী পরিষদ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

মন্ত্রী বলেন, মৃত্যু নিশ্চিত, সময়টা শুধু অনিশ্চিত। আমরা কে, কখন, কোথায় হারিয়ে যাব কেউ জানি না। হঠাৎ করে খবর আসবে আমার বা কোনো বন্ধুর জানাজা পড়তে হবে।

তিনি বলেন, সে জন্য এই স্বল্প সময়ে আমি আহ্বান জানাব, আসুন আমরা সকলে মিলে মিশে সহমর্মিতা, আন্তরিকতার একটি নিবিড় বন্ধন গড়ে তুলি। একে অপরকে ছোট করা, হেয় প্রতিপন্ন করা, বা অপরের ক্ষতি করার চিন্তা চেতনাও যাতে আমাদের মধ্যে না আসে।

দক্ষিণবঙ্গ আইনজীবী পরিষদের সভাপতি বিশিষ্ট আইনজীবী শাহ খসরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন রেলপথমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. নুরুল ইসলাম সুজন ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন প্রমুখ।

এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস এমপি, এম আমিন উদ্দিন, শেখ মো. আতিয়ার রহমান, আলহাজ অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন মিয়া, গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল ও আব্দুল নুর দুলাল প্রমুখ। পরে মরহুমের স্মরণে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘হিংসা বিদ্বেষ পরিহার করে আমাদের মানব জীবন গঠন করা উচিত। কাউকে সম্মান করলে কেউ নিজে ছোট হয় না। সৌহার্দ্য ও সহমর্মিতার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠন করতে হবে। মরহুম নজিবুর রহমান ছিলেন একজন স্পষ্টবাদী, নির্ভিক এবং দলীয় আদর্শের প্রতিক। তার মত কর্মী বর্তমানে খুবই অভাব। আমাদের সকলে মিলে নজিবুরের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। তাহলে প্রকৃতপক্ষে তাকে স্মরণ করা হবে।’

তিনি বলেন, আমার সঙ্গে আইনজীবী নজিবের ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল। প্রতিকূল পরিবেশকে মোকাবেলা করার জন্য তার সঙ্গে ছিল দৃঢ়তা। তিনি সকলকে বুঝাতেন মূল স্রোতের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নাই। অকালে এই বন্ধু আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন এটা কল্পনাতীত।

মন্ত্রী বলেন, আমি ভীষণভাবে বিশ্বাস করি, কাউকে ছোট করে নিজেকে বড় করা যায় না। আর অপরের প্রশংসা করলে নিজেকে ছোট করা হয় না।

সভাপতি আইনজীবী শাহ খসরুজ্জামান বলেন, মরহুম নজিবুর রহমান একজন ভাল মানুষ ছিলেন। তিনি আইনজীবীদের খুব প্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। আমরা তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।

উল্লেখ্য, গত ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা-১০ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের পক্ষে নৌকা প্রতীকের সমর্থনে আইনজীবীরা রাজধানীর ধানমণ্ডিতে একটি মিছিল বের করেন। ওই মিছিলের একেবারে প্রথম সারিতেই ব্যানার হাতে অবস্থান করছিলেন সুপ্রিমকোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) নজিবুর রহমান নজিব (৫৯)। তখন হঠাৎ বুকে ব্যথা উঠলে তাকে সবাই রিকশায় উঠিয়ে পাশের ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু, সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। নজিবুর রহমান ১৯৫৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তার বাড়ি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে।