রোহিঙ্গা শূন্য রাখাইনে চালু হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়

স্থানীয় জনগণের উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে সহিংসতায় বিধ্বস্ত মিয়ানমারের রাখাইনে বিশ্ববিদ্যালয় চালুর পরিকল্পনা করেছে প্রদেশ সরকার। প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন নি পু’র নেতৃত্বে রাখাইনে দেশটির ইউনিভার্সিটি অব ডিসটেন্স এডুকেশনের একটি শাখা চালু করা হচ্ছে বলে খবর দিয়েছে দেশটির ইংরেজি দৈনিক দ্য ইরাবতি।

দ্য ইরাবতি বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির জন্য বুধবার পর্যন্ত ৪০ জনের বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন; যাদের অধিকাংশই সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর।

গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইনে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) বিরুদ্ধে ক্লিয়ারেন্স অপারেশন শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। রাখাইন সীমান্তে এক ডজনের বেশি পুলিশি নিরাপত্তা তল্লাশি চৌকিতে আরসার হামলায় হতাহতের ঘটনার পর অভিযান শুরু হয়।

অভিযানে এখন পর্যন্ত সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম রাখাইন ছেড়ে প্রতিবেশি বাংলাদেশে পালিয়েছে। রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের গণ-পলায়ন ও তাদের বাড়ি-ঘর ধ্বংসের ঘটনায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী ‘জাতিগত নিধন’ অভিযান পরিচালনা করেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতিসংঘ। চলতি বছরের শুরুর দিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রতিনিধি দল রাখাইন সফর শেষে এই অভিযোগ আনে।

দ্য ইরাবতি বলছে, গত বছরের ওই সহিংসতা শুরুর পর রাখাইনে বাণিজ্য, শিক্ষা ও পর্যটন প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। ওই অঞ্চলে বন্ধ হয়ে যাওয়া মৌলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আবারো খুলে দেয়া হয়েছে।

২০১২ সালে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আরাকানিদের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ার পর সংখ্যালঘু এই মুসলিমদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

তবে চলতি বছরের শেষের দিকে রাখাইনে ইউনিভার্সিটি অব ডিসটেন্স এডুকেশনের শাখা চালুর সঙ্গে সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ওপর আরোপিত এই শিক্ষা নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে বলে প্রদেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

মংডু শহরের শিক্ষা বিভাগের প্রধান ইউ খিন অং বলেন, রাখাইনের এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুটি বিষয় মিয়ানমার লিটারেচার এবং ইতিহাসে ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রি দেয়া হবে। ইংরেজি এবং বিজ্ঞানে ডিগ্রি নেয়ার সুযোগ নেই।