ঈদকে সামনে রেখে মাগুরার কামার শিল্পীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন
মাগুরা প্রতিনিধি : ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে পশু জবাই, চামড়া ছাড়ানো ও মাংস তৈরীর জন্য কামারশালায় তৈরী করা অস্ত্রই প্রধান ভরসা। তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন মাগুরার কামার শিল্পীরা । সকাল থেকে শরু করে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে। এ বছর তাদের কাজের চাপ অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক বেশি। তাদের তৈরী অস্ত্র গুলির মধ্যে রয়েছে চাপাতি, দা, বড় ছুরি, ছোট ছুরি, কুরাল চিকন চাকুসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র, । যদিও উপকরণের অভাব, কারিগরদের স্বল্প মুজরি, বিক্রি মূল্য কম, কয়লার দাম বেশিসহ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দিন কাটাচ্ছে তারা ।
মাগুরা সদর উপজেলা ,শ্রীপুর উপজেলা,শালিখা উপজেলা ও মোহাম্মাদপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে কোরবানি গবাদিপশু জবাই করতে এবং মাংস তৈরিতে দা, কুড়াল, ছুড়ি, কাটারী, বেশি প্রয়োজন। এ গুলো তৈরিতে কামার পাড়ায় গুলোতে রাতভর টু টং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে।
আধুনিক প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের প্রসারের ও বহুমাত্রিক সমস্যার কারণে গ্রাম বাংলার সেই কামার শিল্প আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। এক সময় এ ৪ উপজেলায় চার শতাধিক পরিবার এ শিল্পের সাথে জড়িত ছিল। বতমানে মাগুরার আঠারোখাদা, মাটিকাটা, নাকোল, শতখালি, অলোমখালি, নাগরা, শিরগ্রাম, বড়িয়ালা, দড়ি মাগুরা, রাওতাড়া পুলিশ লাইনসহ মাগুরাতে প্রায় শতাধিক পরিবার এ পেশার সাথে জড়িত রয়েছে।
মাগুরা সদর উপজেলার বাটিকাড়াঙ্গা গ্রামের কামার শিল্পী ক্ষমা কর্মকার ও ভুবণ কর্মকার বলেন, পৈতৃকভাবে এ পেশায় এসেছি। তাই বৃদ্ধ বয়সে কাজ করে যাচ্ছি। তারা আরো বলেন, আমাদের সন্তারা এ পেশায় আসতে চাচ্ছে না। শ্রীপুর উপজেলার নাকোল গ্রামের সচিন কর্মকার, বলেন বাপ-ঠাকুরাদারা এই কার্ম করেছে এখন আমরাও করি।” একই উপজেলার মাটিকাটা বাজারের ভোলা কর্মকার বলেন, বর্তমানে এক বস্তা (আগাছা কাঠারে) কয়লার দাম ৩৫০ টাকা এবং সুন্দরী গাছের কয়লা ৬ শত টাকা বস্তা কিনতে হচ্ছে। কয়লা ও লোহার পাতের দাম বেশি হওয়াতে দা, কুড়াল, কাস্তে তৈরিতে যে খরচ হয় সেই তুলনায় দাম পাচ্ছি না যদিও বর্তমানে ঈদকে সামনে রেখে বেচাকেনা ভলো।কুকনা গ্রামের উত্তম কুমার কর্মকার জানান, বাজারে ভালো মানের দা বিক্রি হয় ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা, ছুড়ি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, কাটারী ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায়। মোহাম্মদপুর উপজেলার নাগরা গ্রামের মিঠুন কুমার কর্মকার জানান,“ গত বছরের তুলনায় এ বছর বেচাকেনা বেশী হচ্ছে।” হাজীপুর গ্রামের রুমা বেগম জানান,“ মাগুরা নতুন বাজার থেকে বুধবারে মাংস কাটার একটি দা ক্রয় করেছি ৫০০ টাকায়।”
মাগুরার জেলা বণিক সমিতি’র সভাপতি হুমায়ন কবির রাজা বলেন, “বর্তমানে প্রযুক্তি’র বিকাশ ঘটায় গ্রাম বাংলার সেই কামার শিল্প আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। ঈদে বেচা কেনা বেশী হলেও সারা বছর কামার এক প্রকার বসেই থাকে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন