সেনাবাহিনীর ওপর অবরোধ দেয়া হলে ফল ভালো হবে না : সু চির মুখপাত্র

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর অবরোধ আরোপ করা হলে দেশটির ‘অপরিণত বেসামরিক সরকার’ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির মুখপাত্র জ হতয়।

রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়নের প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের ওপর ফের অবরোধ আরোপের প্রস্তাব করেন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটররা। ওই প্রস্তাব পাস হলে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারের সেনাকর্মকর্তাদের ওপর সুনির্দিষ্ট অবেরাধ ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে এবং দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ সামরিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যাবে।

এর প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমারের নেত্রী সু চির মুখপাত্র জ হতয় বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘দেশের অর্থনীতির উন্নতির জন্য আমাদের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা দরকার। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ভ্রমণ ও ব্যবসা বিনিয়োগের সঙ্গে জড়িত মানুষদের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। এ ছাড়া আরও অনেক খারাপ পরিণতি আছে।’

তিনি বলেন, ‘অবরোধ ও চাপ সরকারের কাজে বাধা সৃষ্টি করে। পূর্বের অভিজ্ঞতা বলে, তারা যদি অবরোধ আরোপ করে তাহলে এর ফল ইতিবাচক হবে না।’

ইরানি গণমাধ্যম পার্স টুডের খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন ১৫ নভেম্বর মিয়ানমার সফর করবেন বলে কথা রয়েছে। দেশটির রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটিক দলের সিনিয়র আইনপ্রণেতারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব দিয়েছেন।

জ হতয় এ সম্পর্কে বলেন, ‘রেক্স টিলারসন এখানে এলে আমরা কী করছি তা তুলে ধরব। আমরা তাকে বলতে পারি না, ওটা করবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল কী তাও আমরা জানি না।’

হতয় আরও বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে নিপীড়নের নিছক অভিযোগে কান না দিয়ে রাখাইনের বিষয়ে ‘ইতিবাচকভাবে সহযোগিতা’ করতে আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি আহ্বান জানায় মিয়ানমার। তবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো এড়িয়ে যাচ্ছি না। সেগুলো শুধুই অভিযোগ। কূটনৈতিক মহল ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর যারা অভিযোগ তুলছে, তারা কোনো প্রমাণ দিচ্ছে না। আমরা চাওয়ার পরও কেউ তাদের অভিযোগের পক্ষে জোরালো প্রমাণ দিতে পারেনি।’

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের দাবির ভিত্তিতেও মিয়ানমার এখনো কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘তাদের অভিযোগ সত্য হলে আমরা ব্যবস্থা নেব। তাই শুধু অভিযোগ না তুলে আমাদের সামনে জোরালো প্রমাণ হাজির করুন।’

এদিকে, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) সহকারী হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক রাখাইনে রোহিঙ্গাদের কাছে অবাধে প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও সম্মানের সঙ্গে নিজ জন্মভূমিতে প্রত্যাবাসনের আহ্বান জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর শুদ্ধি অভিযান শুরু করলে এ পর্যন্ত ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। তাছাড়া এখনও রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে।