অবশেষে বুলবুলের ১৮ দফা ইশতেহার

ভোটগ্রহণের মাত্র ছয় দিন আগে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করলেন রাজশাহী সিটি নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।

মঙ্গলবার বেলা ৩টায় নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ১৮ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।

রাজশাহী সিটি নির্বাচনে মোট ৫ প্রার্থী মেয়র পদে লড়ছেন। সবার শেষে ইশতেহার ঘোষণা করলেন মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন গত ১০ জুলাই আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর দিনই ইশতেহার ঘোষণা করেন।

মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সিটি কর্পোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। বুলবুল এই হোল্ডিং ট্যাক্স কমানোরও ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে অতিরিক্ত এই হোল্ডিং ট্যাক্স কমেনি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ নগরবাসী। এ অবস্থায় এবার নিজের নির্বাচনী ইশতেহারের এক নম্বরে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অতিরিক্ত করের বোঝা লাঘব করবেন বুলবুল।

মেয়র হিসেবে বুলবুল দায়িত্ব গ্রহণের আগেই নগরীর বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেয়া শুরু হয়। তবে পরে এই কার্যক্রম থেমে যায়। মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল মেয়র হিসেবে দায়িত্বপালন করলেও তিনি গ্যাস সংযোগ দেয়ার কার্যক্রম চালু করতে পারেননি। এবার নির্বাচনী ইশতেহারে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, নির্বাচিত হলে তিনি গ্যাস সংযোগের জন্য জনগণকে নিয়ে আন্দোলন করবেন।

মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল তার নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়েছেন, চাকরির ক্ষেত্রে চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনকে সহযোগিতা করা হবে। এক্ষেত্রে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন থাকবে। তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নগরীর ১৯টি পুকুর ঘিরে পানি সংরক্ষণের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। সেসব পুকুরে কাপড় কাঁচতে পারবেন না কেউ।

মেয়র হিসেবে দায়িত্বপালনকালে সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীদের ঠিকমতো বেতনও দিতে পারেননি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। তবে নির্বাচনী ইশতেহারে বুলবুল বলেছেন, এবার তিনি নির্বাচিত হলে কর্মচারীদের দুই ঈদ ও পহেলা বৈশাখে উৎসব ভাতা দেবেন। কর্মচারীর মৃত্যুতে দেয়া হবে এককালীন ৫০ হাজার টাকা অনুদান।

বুলবুলের ১৮ দফার ইশতেহারে এর বাইরে যেসব প্রতিশ্রুতি রয়েছে সেগুলো প্রায় সবই নাগরিকসেবা নিশ্চিত করার বিষয় সংক্রান্ত।

এর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত, বিনোদনের ব্যবস্থা, স্কুল-কলেজ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ, যানজট নিরসন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধন, বৃক্ষরোপণ, নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, খেলাধুলার ব্যবস্থা, মাদক নিরাময়কেন্দ্র গড়ে তোলা, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ।

গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ২০ দফা ইশতেহার দিয়েছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। মেয়র নির্বাচিত হলেও বুলবুল অধিকাংশই বাস্তবায়ন করতে পারেননি বলে অভিযোগ নগরবাসীর।

এ অবস্থায় বুলবুলের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে বড় কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন কিংবা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নেই। তবে ইশতেহার ঘোষণার সময় বুলবুল বলেছেন, মেয়র নির্বাচিত হলে তিনি রাজশাহীর উন্নয়নের বিষয়টি মাথায় রেখেই কাজ করবেন।

বুলবুলের ইশতেহার ঘোষণার সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, মাহমুদুল ইসলাম টুকু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও গয়েশ্বরের পূত্রবধূ নিপুন রায় চৌধুরীসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।