অভিজ্ঞতা কেনা যায় না : মাশরাফি

কবি কালীপ্রসন্ন ঘোষের কবিতার একটি পংক্তি এমন, ‘একবার না পারিলে দেখ শতবার’। নাহ, বাংলাদেশকে শতবার দেখতে হয়নি। বিদেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬ বারের প্রচেষ্টায় ব্যর্থ ছিলেন টাইগাররা। ১৭ বারের চেষ্টায়ই সফল হয়েছেন মাশরাফি-সাকিবরা। ডাবলিনের ক্লনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাবে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে কিউইদের বিপক্ষে ৫ উইকেটের ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

যাদের হাত ধরে এল এই ঐতিহাসিক জয়, তাদের অধিকাংশই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। বোলিংয়ে যেমন অভিজ্ঞতার প্রমাণ রেখেছেন সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মর্তুজা। ৭ মাস পর একাদশে জায়গা পাওয়া নাসিরও ভালো করেছেন। তিনজনই নিয়েছেন ২ উইকেট করে।

আবার ব্যাটিংয়ে অভিজ্ঞতায় প্রমাণ রেখেছেন তামিম ইকবাল (৬৫), সাব্বির রহমান (৬৫)। বিশেষ করে, দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়া মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রচণ্ড চাপেও ভেঙে পড়েননি। ম্যাচ সেরা মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ৪৫ রানে (৪৫ বলে)। আর মাহমুদউল্লাহর হার না মানা ইনিংসটি ৪৬ রানের (৩৬ বলে)।

বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয়া অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটার মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর প্রশংসায় পঞ্চমুখ মাশরাফি। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘আপনি অভিজ্ঞতা কিনতে পারবেন না। অভিজ্ঞতা কেনা যায় না…। মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। ওরা যেভাবে ব্যাট করতে, তা ছিল সত্যিই অবিশ্বাস্য। এমন পরিস্থিতিতেই আমরা কিছু ম্যাচ হেরেছি। সেজন্য এখানেও (ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচ) ভয়টা ছিল। মুশফিক-রিয়াদের ব্যাটিং আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নিয়ে গেছে।’

ম্যাচটিতে ছিল ক্যাচ মিসের মহড়াও। যার মূল্য দিয়েছেন টাইগাররা। প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই সাজঘরে ফিরে যেতেন টম ল্যাথাম। মাশরাফির বলে স্কোয়ার লেগে সুইপ করতে চেয়েছিলেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক। বলটি গিয়ে আশ্রয় নিতে পারত নাসির হোসেনের হাতে। কিন্তু পারলেন না বাংলাদেশি এই ফিল্ডার। নাসিরের হাত ফসকে বল গড়ায় মাটিতে। জীবন ফিরে পাওয়া ল্যাথাম শেষ পর্যন্ত খেলেছেন ৯২ বলে ১১টি চারের সাহায্যে খেলেছেন ৮৪ রানের ইনিংস। তার ইনিংসটা নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ।

মাশরাফির আক্ষেপে ছিল ফিল্ডিং। পরে ঘুরে দাঁড়ানোয় বোলারদের প্রশংসাও করলেন টাইগার অধিনায়ক, ‘আমি মনে করি, আমাদের শুরুটা ভালো ছিল না। আমাদের কিছু ক্যাচ মিস হয়েছে, যার মূল্যও দিতে হয়েছে। মাঝপথে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। সাকিব ভালো বল করেছে। নাসিরও বল হাতে নিজেকে মেলে ধরেছে। মোস্তাফিজ তো সবসময়ই ভালো করে আসছে। রুবেলও ভালো করেছে। বোলারদের কারণে আমরা ৫০-৬০ রান সেভ করতে পেরেছি।’

ব্যাটসম্যানদের প্রশংসায় মাশরাফি বলেন, ‘শুরুতে উইকেট হারিয়ে ফেলি। যা আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু তামিম-সাব্বিরের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। এমন ব্যাটিংটাই আমরা চেয়েছিলাম।’