শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা

অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের দুইটি মামলায় সাক্ষ দিলেন কলারোয়া আ.লীগের সভাপতি

২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরায় কলারোয়ায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের দু’টি মামলার সাক্ষ দিলেন ওই মামলার সাক্ষী কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন।

বুধবার (২৯ জুন) সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মণ্ডলের আদালতের কাঠগোড়ায় উপস্থিত ৪০ জন আসামির উপস্থিতিতে এ সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
১৪ জুলাই মামলার পরবর্তী সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা আদালত সূত্রে জানা যায়, অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের দু’টি মামলায় কারাগারে থাকা ৪০ জন আসামিকে বুধবার সকাল সোয়া ১০টায় জেলা কারাগার থেকে স্পেশাল টাইব্যুনাল-৩ এর কাঠগোড়ায় হাজির করা হয়। এ মামলায় ৯জন আসামি পলাতক রয়েছে। ১০টা ৩২ মিনিটে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলার কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামকে সাক্ষী হিসেবে হাজির করানো হয়। তবে ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনের সাক্ষী গ্রহণের পর রাষ্ট্রপক্ষ পরবর্তী সাক্ষীর জন্য সময়ের আবেদন করলে বিচারক আগামি ১৪ জুলাই সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য করেন।

আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাড. আব্দুল মজিদ (২), অ্যাড. মিজানুর রহমানর পিন্টু, অ্যাড. শাহানারা পারভিন বকুল প্রমুখ।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল অ্যাড.এসএম মুনীর, সহকারী এটর্নি জেনারেল অ্যাড. মো. শাহীন মৃধা, সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ, জিপি অ্যাড. শম্ভুনাথ সিংহ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এ্যসোসিয়েশনের সহ.সভাপতি অ্যাড. মোহম্মদ হোসেন প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সকাল ১০টায় তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন। সেখান থেকে যশোরে ফিরে যাওয়ার পথে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা কলারোয়ায় দলীয় অফিসের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাস (সাতক্ষীরা-জ-০৪-০০২৯) রাস্তার উপরে আড় করে দিয়ে তার গাড়ি বহরে হামলা চালায়। হামলায় আওয়ামী লীগের ১ ডজন নেতা-কর্মী আহত হন। এ ঘটনায় করা হামলা মামলায় ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারী সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জন নেতা-কর্মীকে ৪ থেকে ১০ বছর মেয়াদে সাজা প্রদান করেন সাতক্ষীরার চিপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবির।

এর আগে গত ১৪ জুন অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনের অপর দুটি মামলায় চার্জ গঠন করা হয়।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল অ্যাড. এসএম মনীর বলেন, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট কলারোয়ায় তৎকালিন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলার একটি অংশে গত ৪ ফেব্রুয়ারি সাবেক বিএনপি সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের ৪ থেকে ১০ বছরে মেয়াদে সাজা হয়।
এ মামলার অপর দুইটি অংশে অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের দু’টি মামলায় বুধবার ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন সাক্ষ দিয়েছেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য আগামি ১৪ জুলাই দিন ধার্য করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আদালত চাইলে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ি ৩ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে।