আপনার কি ঘন ঘন প্রস্রাব হয়? সাবধান!

কিডনী রোগের প্রাদুর্ভাব আজ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে। সমগ্র বিশ্বের সাথে সাথে বাংলাদেশেও এখন কিডনী রোগ পরিস্থিতি ভয়াবহ। লক্ষণের দুর্বোধ্যতার জন্য ক্রনিক কিডনি রোগে ভুগছেন এমন অনেকেই জানেন না যে তার এই রোগটি আছে। ক্রনিক কিডনি রোগ অনেক বছর পরে কিডনি ফেইলিউর সৃষ্টি করে।

সিকেডি আছে এমন অনেকেরই সারা জীবনে কিডনি ফেইলিউর হয়না। ষ্টেজ ৩ সিকেডি আছে এমন ৮০% লোকের কিডনি অকেজো হয়না। কিডনি রোগের যেকোন ষ্টেজের জন্যই কিডনি রোগ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনই হচ্ছে এই রোগ নিরাময়ের মূল শক্তি। কিডনি রোগের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা থাকলে সেই অনুযায়ী নিরাময়ের ব্যবস্থা নেয়া সহজ হয়।

আপনার অথবা আপনার পরিচিত কারো যদি কিডনি রোগের এক বা একাধিক লক্ষণ দেখা যায় তাহলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে ব্লাড ও ইউরিন টেস্ট করিয়ে নিশ্চিত হোন। কারণ কিডনি রোগের উপসর্গ গুলোর সাথে অন্য স্বাস্থ্য সমস্যার উপসর্গের মিল আছে। আসুন জেনে নেই কিডনি রোগের উপসর্গ গুলো সম্বন্ধে।

১। এনার্জি কমে যাওয়া, অনেক বেশি ক্লান্ত অনুভব করা অথবা মনোযোগের সমস্যা হওয়া
কিডনির কর্মক্ষমতা যখন মারাত্মক ভাবে কমে যায় তখন রক্তে অপদ্রব্য হিসেবে টক্সিন উৎপন্ন হয়। এর ফলে আপনি দুর্বল ও ক্লান্ত অনুভব করেন এবং কোন বিষয়ে মনোযোগ দেয়াটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আরেকটা জটিলতা দেখা দিতে পারে, আর তা হচ্ছে এনেমিয়া। রক্তস্বল্পতার কারণেও দুর্বলতা বা অবসাদ গ্রস্থতার সমস্যা হতে পারে।

২। ঘুমের সমস্যা হওয়া
যখন কিডনি রক্ত পরিশোধন করতে অপারগ হয় তখন রক্তের টক্সিন প্রস্রাবের মাধ্যমে বাহির হতে পারেনা বলে রক্তেই থেকে যায়। যার কারণে ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি হয়। অবেসিটি বা স্থূলতার সাথে ক্রনিক কিডনি ডিজিজের যোগসূত্র আছে। এবং নিদ্রাহীনতা ক্রনিক কিডনি ডিজিজের একটি সাধারণ উপসর্গ।

৩। ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া ও ফেটে যাওয়া
সুস্থ কিডনি অনেক গুরুত্ব পূর্ণ কাজ করে থাকে। কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত তরল বাহির করে দেয়, লাল রক্ত কণিকা তৈরি করে, হাড়কে শক্তিশালী করে এবং খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করে। শুষ্ক ও ফেটে যাওয়া ত্বক খনিজ ও হাড়ের অসুখের জন্য ও হতে পারে যা অ্যাডভান্স কিডনি রোগের সহগামী হিসেবে থাকতে পারে যখন কিডনি রক্তের পুষ্টি উপাদান ও খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারেনা।

৪। ঘন ঘন প্রস্রাব করা
যদি আপনার প্রায়ই মূত্রত্যাগের প্রয়োজন হয় বিশেষ করে রাতের বেলায় তাহলে এটা কিডনি রোগের লক্ষণ। যখন কিডনির ছাঁকনি গুলো নষ্ট হয়ে যায় তখন প্রস্রাবের বেগ বৃদ্ধি পায়। ঘন ঘন মূত্রত্যাগ ইউরিন ইনফেকশনের ও লক্ষণ হতে পারে, পুরুষের ক্ষেত্রে প্রোস্টেট গ্লেন্ড বড় হয়ে গেলেও এই উপসর্গ দেখা দেয়।

৫। প্রস্রাবের সাথে রক্ত গেলে
সুস্থ কিডনি সাধারণত ব্লাড সেল গুলোকে শরীরের ভিতরে রেখে রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ মূত্র হিসেবে বাহির করে দেয়। যখন কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হয় তখন ব্লাড সেল বাহির হতে শুরু করে। প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়ার এই লক্ষণটির কিডনি রোগের সাথে সাথে টিউমার, কিডনি পাথর বা ইনফেকশনেরও ইঙ্গিত হতে পারে।