ইউএনও ওয়াহিদার অবস্থা বিপজ্জনক: চিকিৎসক

গভীর রাতে নিজের সরকারি বাসভবনে হামলার শিকার দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন রাজধানীর ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের চিকিৎসক।

বৃহস্পতিবার বিকালে নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে এক ব্রিফিংয়ে একথা জানান।

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ইউএনও আশঙ্কাজনক অবস্থাতেই আছেন। তার ব্লাডপ্রেসার, পালস এগুলোর উন্নতি না হলে এবং উনার যদি জ্ঞানের মাত্রার আরও অবনতি হয় তাহলে কিন্তু… উনি যথেষ্ট বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে আছেন। যে কোনো সময় একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন এই চিকিৎসক।

চিকিৎসক আরও জানান, উনার (ইউএনও ওয়াহিদা খানম) চিকিৎসার জন্য ৭ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে তার অস্ত্রোপচার করা সম্ভব নয়।

প্রসঙ্গত, বুধবার রাত ৩টার দিকে উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে ইউএনওর বাসভবনের ভেন্টিলেটর দিয়ে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর হামলা হয় বলে ঘোড়াঘাট থানার ওসি আমিরুল ইসলাম জানিয়েছেন।

ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে দুর্বৃত্তরা।

ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ জানায়, বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে অবস্থিত ইউএনওর বাসভবনের টয়লেটের ভেল্টিলেটর ভেঙে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করে। ইউএনও টের পেলে দুর্বৃত্তরা তাকে সরাসরি ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এ সময় তার বাবা এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা তাকেও আঘাত করে পালিয়ে যায়। রাতেই রক্তাক্ত ইউএনওকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে সকালে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম ও পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল উপস্থিত হন।

ঘোড়াঘাট থানা পুলিশের ওসি আমিরুল ইসলাম জানান, ঠিক কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা জানা যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের স্বামী রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। ওয়াহিদা খানমের সঙ্গে বাবা ওমর আলী থাকতেন।

আহত ওয়াহিদা খানমকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে তাকে এয়ার অ্যাস্বুলেন্সে করে ঢাকার আনা হয়। ওয়াহিদার বাবাকে ঘোড়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ওয়াহিদার বাবা নওগাঁ থেকে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। তার স্বামী মেজবাহুল হোসেন রংপুরের পীরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তাদের তিন বছর বয়সী এক ছেলে রয়েছে।