উড়ন্ত ইংল্যান্ডকে মাটিতে নামিয়ে ফাইনালে পাকিস্তান

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শুরু থেকে ইংল্যান্ডের দাপট ছিল চোখে পড়ার মতোই। গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতেছে স্বাগতিকরা। টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট তারা! স্বাগতিকদের নিয়ে তাই আশাবাদী ছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। সেমিফাইনালে এসে কেন যেন খেই হারিয়ে ফেলে ইংলিশরা। ব্যাটিং ও বোলিং; দুই বিভাগেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে ইয়ন মরগান বাহিনী।

যা হওয়ার হলো ঠিক তা-ই। উড়ন্ত ইংল্যান্ডকে মাটিতে নামাল পাকিস্তান। কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে আজ শেষ চারের লড়াইয়ে ইংলিশদের ৮ উইকেটে হারিয়েছে সরফরাজ আহমেদের দল। তাতে ফাইনালের টিকিট পেয়ে যায় ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপজয়ী পাকিস্তান।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেননি ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। পাকিস্তানি বোলারদের তোপে নির্ধারিত ৫০ ওভারই ব্যাট করতে পারেনি। ৪৯.৫ ওভারে ২১১ রানে অলআউট ইয়ন মরগান বাহিনী। জবাবে ৩৭.১ ওভারে (৭৭ বল হাতে রেখেই) ২ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাকিস্তান।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইংলিশ বোলারদের তুলোধুনো করে ছাড়েন পাকিস্তানের দুই ওপেনার ফাখর জামান ও আজহার আলি। উদ্বোধনী জুটি টিকেছিল ২১তম ওভার পর্যন্ত। ফাখর জামান ও আজহার আলি মিলে ১১৮ রান যোগ করেন পাকিস্তানের স্কোরশিটে।

পাকিস্তানের দুই ওপেনারই পেয়েছেন ফিফটি দেখা। আদিল রশিদের বলে জস বাটলারের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে ফাখর জামান করেছেন ৫৭ রান। তার ৫৮ বলের ইনিংসটি সমৃদ্ধ ৭টি চার ও একটি ছক্কায়। আজহার আলি করেছেন ১০০ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৭৬ রান। তিনি বোল্ডআউট হন জ্যাক বলের আঘাতে।

পাকিস্তানকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন বাবর আজম (৩৮*) ও মোহাম্মদ হাফিজ (৩১)। ইংল্যান্ডের পক্ষে একটি করে উইকেট নিয়েছেন জ্যাক বল ও আদিল রশিদ।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ইংলিশদের শুরুটা অবশ্য ভালোই ছিল। ৫ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৯ রান তুলেছিলেন ইয়ন মরগানের দল। রান রেট ৫.৮০। ষষ্ঠ ওভারে শুরু ছন্দপতন। মোহাম্মদ আমিরের পরিবর্তে খেলতে নামা রুম্মন রইসের বল কভারে মারতে গিয়ে বাবর আজমের হাতে ধরা পড়েন অ্যালেক্স হেলস। ১৩ রানেই থামে হেলসের দৌড়।

দ্বিতীয় উইকেট জুটি জমে উঠেছিল! এই জুটিতে ইংল্যান্ডের স্কোরশিটে জমা হয় ৪৬ রান। জনি বেয়ারস্টোর অবদান ২২ আর জো রুটের ২৪। এই জুটি ভাঙেন হাসান আলি। পাকিস্তানি এই তরুণ পেসার ফেরান ৪৩ রান করা জনি বেয়ারস্টোকে।

তৃতীয় উইকেটে রুট জুটি বাঁধেন অধিনায়ক ইয়ন মরগানের সঙ্গে। এই জুটিতে ইংল্যান্ড পায় ৪৮ রান। রুটের অবদান ২২ আর মরগানের ২৫। ফিফটির কাছাকাছি গিয়ে আউট রুট। ৫৬ বলে দুটি চারে ৪৬ রান করে শাদাব খানের বলে সরফরাজ আহমেদের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান।

অধিনায়ক ইয়ন মরগান থেমেছেন ৩৩ রানে। তিনি শিকার হাসান আলির। দলের অন্যতম ভরসার প্রতীক জস বাটলার পারেননি নামের প্রতি সুবিচার করতে। ৪ রান করতেই জুনায়েদ খানের বলে সরফরাজের তালুবন্দি হন বাটলার।

১৪৮ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে চাপে ইংল্যান্ড। সেই ধকল আর সামলে উঠতে পারেনি স্বাগতিকরা। মঈন আলি দুই অঙ্ক ছুঁতে সক্ষম হন। ১১ রান আসে তার ব্যাট থেকে। শেষ দিকে লড়াইয়ের আভাস দিয়েছিলেন বেন স্টোকস। ৩৪ রানে থেমেছেন তিনি। বাকিরা ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্ক।

পাকিস্তানের সেরা বোলার হাসান আলি। ১০ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে পকেটে পুরেছেন ৩ উইকেট। দুটি করে উইকেট লাভ করেছেন জুনায়েদ খান ও রুম্মন রইস। শাদাব খান নিয়েছেন একটি উইকেট।