উ. কোরিয়া যুদ্ধে প্রথমদিনেই মরবে ১০ হাজার মার্কিন সেনা

উত্তর কোরিয়ায় হামলা চালালে প্রথমদিনেই ১০ হাজার মার্কিন সেনা হতাহত হতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার হাওয়াই দ্বীপে এক বৈঠক শেষে এ আশঙ্কার কথা জাননো হয়।

সামরিক কর্মকর্তারা বলেছেন, ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মোট সাত হাজার মার্কিন সেনা নিহত হয়েছে। পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে যুদ্ধ বাধলে প্রথমদিনেই এ সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে পারে। নিউইয়র্ক টাইমসের শনিবারের এক প্রতিবেদনে এ খবর দেয়া হয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধের বিষয়ে বৃহস্পতিবার হাওয়াই দ্বীপে নিজেদের উদ্বেগ জানাতে গোপন বৈঠকে মিলিত হন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তারা। বৈঠকে সম্ভাব্য যুদ্ধে কী কী ঘটতে পারে তা নিয়ে কর্মকর্তারা বিস্তারিত আলোচনা করেন। বৈঠকের নেতৃত্বে ছিলেন মার্কিন সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারেল মার্ক মিলে এবং মার্কিন স্পেশাল অপারেশনের কমান্ডার জেনারেল রেমন্ড থমাস। কর্মকর্তারা বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের প্রথম দিনটাই হবে ‘বিপর্যয়কর’।

বৈঠকে জেনারেল মার্ক মিলে বলেন, যুদ্ধে ব্যাপকসংখ্যক মার্কিন সেনা সদস্য হতাহত হওয়ার পাশাপাশি ব্যাপকসংখ্যক বেসামরিক নাগরিক মৃত্যুর মুখে পড়বে। তিনি বলেন, ‘নির্মমতা-নৃশংসতা এমন পর্যায়ে যাবে যা জীবিত সেনাদের অভিজ্ঞতার সীমার বাইরে।’ উত্তর কোরিয়ার পরমাণু ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে যখন চরম উত্তেজনা ও যুদ্ধ লাগে লাগে পরিস্থিতি তখন এ উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মার্কিন সেনা কর্মকর্তারা।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টদের ধারাবাহিকতায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পর কোরিয়ার বিরুদ্ধে অবিরাম হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন। এমনকি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সর্বশেষ অধিবেশনে উত্তর কোরিয়াকে ‘সম্পূণ ধ্বংস করে’ দেয়ার হুশিয়ারি দেন তিনি। মার্কিন প্রশাসন ও কূটনীতিকরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে একটি কূটনৈতিক সমাধান তাদের পছন্দ।

তবে তারা এ কথাও বলছেন যে, সামরিক পদক্ষেপসহ অন্য সব অপশনই টেবিলে রয়েছে। ওয়াশিংটন গো ধরে আছে, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যে কোনো আলোচনাই হতে হবে পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ। তবে পিয়ংইয়ং ওয়াসিংটনের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে।চলতি সপ্তাহেই মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিদার নয়ার্ট বলেছেন, ‘আলোচনার ক্ষেত্রে আমাদের একমাত্র শর্ত হচ্ছে আগে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ করতে হবে।

আমাদের নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। বর্তমান প্রশাসনের প্রথম দিন থেকেই একই নীতি নিয়ে আমরা কথা বলছি। আর সেটা হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার ওপর সর্বোচ্চ চাপপ্রয়োগ করা।’যুক্তরাষ্ট্রের শত হুমকি-ধমকি সত্ত্বেও পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে উত্তর কোরিয়া।

একটি পরিপূর্ণ পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হয়ে উঠাই তাদের লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কখনও পরমাণু আবার কখনও বিভিন্ন পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাচ্ছে তারা। এসব পরীক্ষার কারণে সেই ২০০৬ সাল থেকে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে রয়েছে দেশটি।