এই বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জন্ম নেবে ৫০ হাজার শিশু

শিশুদের নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেন বলছে, চলতি বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নারীরা অন্তত ৫০ হাজার সন্তান জন্ম দেবে।

সংস্থাটির তথ্য মতে ২০১৮ সালে প্রায় ৫০ হাজার শিশু জন্ম নিবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে, দিনের হিসেবে ধরা হলে প্রতিদিন অন্তত ১৩০ জন শিশু পৃথিবীর আলো দেখবে।

এরই মধ্যে সেখানে জন্ম নেওয়া বহু শিশু নানান রোগে ভুগছে। তারপরও সেখানে নতুন প্রাণ জন্মানোর ধারা থেমে নেই।

তাদেরই একজন দুই মাস বয়সী আসিসের জন্ম কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশেই নোম্যান্স ল্যান্ডে। বাঁশ আর ত্রিপাল দিয়ে বানানো তাবুতে কোনো চিকিৎসাকর্মী ছাড়াই আসিসের জন্ম দেন ২০ বছর বয়সী আনোয়ারা বেগম।

আনোয়ারা বেগম যখন মিয়ানমার থেকে পালিয়ে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে ১৫ দিন ধরে হাঁটতে হাঁটতে বাংলাদেশে আসেন তখন তিনি আট মাসের গর্ভবতী। মেয়েকে নিয়ে তার স্বপ্নের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, তাকে ভালো শিক্ষা দেয়া এবং একটি শান্তিপূর্ণ দেশে থাকতে পারা।

এইড গ্রুপের মাতৃত্বকালীন নার্সরা নিয়মিত তাবুগুলোতে গিয়ে প্রসূতিদের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করছেন এবং স্তনপান ও পুষ্টি বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। তারপরও নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে শিশুরা।

গত বছরের ২৫ অগাস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। গণহত্যা, ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া এবং পুড়িয়ে ফেলা, নারীদের ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শিশুকে পুড়িয়ে ফেলার মতো সহিংসতার শিকার হয় রোহিঙ্গারা।

সেই সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসার পরে, ডিপথেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব এখন ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য বড় হুমকি।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২৫২৬ জন ডিপথেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর তিন চতুর্থাংশ শিশু যাদের বয়স ১৫ বছরের নিচে। মৃত্যুর সংখ্যা এখন পর্যন্ত ২৭।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পাশাপাশি আরো কিছু সাহায্য সংস্থা ১৫ বছরের কম বয়সী হাজার হাজার শিশুকে টিকার আওতায় আনার চেষ্টা করছে।