একযুগ আগে হারানো মাকে ফিরিয়ে দিলেন নেপালের কয়েক তরুণ

পথে প্রান্তরে পাগলের মতো ছুটে বেরিয়েও সন্ধান মেলেনি। শেষ পর্যন্ত মায়ের আশা ছেড়েই দেয় সন্তানরা। একযুগ পর অভাগা সন্তানদের সামনে স্বপ্নের মতো হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া মাকে নিয়ে হাজির নেপালের কয়েকজন তরুণ। দীর্ঘদিন পর মা-সন্তান-স্বজনের সম্মিলনে আনন্দের মধ্যেও লুকিয়ে ছিলো এক পাহাড় কষ্ট।

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের ঘোড়ামারা গ্রাম। বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে এক যুগের অপেক্ষা আর বেদনার অবসানের বার্তা নিয়ে হাজির হন নেপালি তরুণরা। ১২ বছর আগে এই গ্রাম থেকে হারিয়ে যাওয়া মোমেনা বেগমকে সন্তান-স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেন তারা।

মোমেনাকে ফিরে পেয়ে সন্তান-স্বজনদের চোখ বেয়ে পড়ে আনন্দাশ্রু। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে হাঁটতে হাঁটতে নগর, বন্দর এমনকি দেশের সীমানা পেরিয়ে মোমেনার ঠাঁই হয় নেপালের জঙ্গলে। সেখানে মোমেনাকে দেখতে পেয়ে তুলে নিয়ে যান মানব সেবা আশ্রমের কর্মীরা। এতোটা বছর সেখানেই কাটানোর পর সম্বিত ফিরে পেলে নিজের ঠিকানা বলতে পারেন তিনি। তার ঠিকানা অনুযায়ী স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেন নেপালের ঐ আশ্রমের তরুণরা।

এরই মধ্যে তছনছ হয়ে গেছে মোমেনার সংসার। নিখোঁজের দুই বছরের মাথায় বিয়ে করেন স্বামী আব্দুল কুদ্দুস। মা হারিয়ে কচুরিপানার মতো ভাসতে থাকা পাঁচ সন্তানের ঠাঁই হয় মোমেনার দুই বোনের কাছে।

অসহায় এই নারীর পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধান। তিনি বলেন, মহিলাকে জমি দিয়ে তার ঘরের ব্যবস্থা করিয়ে দেবো। পরিবারটা যাতে প্রতিষ্ঠিত হয় সে ব্যাপারে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে চেষ্টা করবো।

স্বামীর বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়িতে উঠতে না দেয়ায় গোবিন্দগঞ্জের ঘোড়ামারা গ্রামে বড় বোন আফরোজার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন মোমেনা।