করোনা টিকা রফতানি নিষিদ্ধ করল ভারত

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা রফতানিতে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটের উপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। কয়েকমাস এ নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয়।

ভারতের এ নিষেধাজ্ঞার কারণে দরিদ্র দেশগুলোর সাধারণ মানুষের কাছে টিকা পৌঁছাতে সম্ভবত কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে।

মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) দেয়া সাক্ষাতকারে সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদর পুনাওয়ালা বলেন, রোববার ভারতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা তাদের টিকার জরুরি অনুমোদন দিয়েছে। তবে শর্ত হচ্ছে ভারতের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেরাম ইনস্টিটিউট টিকা রফতানি করা যাবে না।

‘আমরা এ মুহূর্তে শুধু ভারত সরকারকে টিকা সরবরাহ করতে পারবো। টিকা মজুদ না করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’ পুনাওয়ালা আরও বলেন, ভারতের অন্তভ্যরীণ বাজারে টিকা বিক্রি করা থেকেও সেরামকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

দিনের শুরুতে সেরাম ইনস্টিটিউট এক সভায় জানায়, যেসব দেশ তাদের টিকা নিতে আগ্রহী, তাদেরকে দেয়ার আগে দু’মাস ভারতের তাৎক্ষণিকভাবে কি পরিমাণ টিকার প্রয়োজন, তা উৎপাদনে মনোনিবেশ করতে চায় তারা।

রোববার ভারতের ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল (ডিসিজিআই) জরুরি অনুমোদনের বিষয়টি ঘোষণা করেন। এরমধ্য দিয়ে করোনা ভাইরাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে টিকা প্রয়োগের দ্বার উন্মোচিত হয়।

ভারতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক কোটিরও বেশি মানুষ; যা বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আর মারা গেছেন প্রায় দেড় লাখ। বণ্টন পরিকল্পনার শুরুতেই ভারত ৩০ কোটি জনগণকে টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। এদের মধ্যে অগ্রাধিকার পাবেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ সম্মুখ সারির করোনা যোদ্ধারা।

ভারতে তৈরি অক্সফোর্ডের টিকা বাংলাদেশকে দিতেও রাজি হয় প্রতিষ্ঠানটি। যার কারণে টিকা পাওয়ার খুব কাছাকছি ছিল বাংলাদেশ। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী আশাও প্রকাশ করেছিলেন, জানুয়ারির মধ্যে টিকা পাওয়া যাবে।

২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কোভ্যাক্সের ২০ কোটি থেকে ৩০ কোটি ডোজ টিকা বাংলাদেশকে দেয়ার পরিকল্পনাও করেছিল সেরাম।

অক্সেফোর্ডের তৈরি কোভিডশিল্ড টিকার ৩ কোটি ডোজ পাওয়ার জন্য ৫ নভেম্বর সেরাম ইনস্টিটিউট এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ।

বেক্সিমকোর মাধ্যমে প্রথমধাপের ছয় মাস, প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা দেয়ার পরিকল্পনা করেছিল সেরাম।

জীবন রক্ষাকারী ভ্যাকসিনের উপর ভারতের হঠাৎ নিষেধাজ্ঞা, ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাস বিরুদ্ধে লড়াইকে দীর্ঘায়িত করবে; তাতে সন্দেহ নেই, বলা চলে।