কর্মসূচিতে দায়সারা ও ফটো সেশন, নেতাদের গা বাঁচানো, স্থবির কমিটিসহ নানা কারণে আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপি

উপজেলা-জেলা-কেন্দ্র, সব স্তরেই যেনো স্থবির হয়ে আছে বিএনপির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড। সরকার পতনের একদফা আন্দোলনের আগে সংগঠন গোছানোর উদ্যোগ নেয়া হলেও পরিপূর্ণভাবে তা করতে পারেনি দলটি।

জানা গেছে, দলটির ৮২টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৬৫টিরই কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ। অধিকাংশ জেলায় আংশিক আহ্বায়ক কমিটি রয়েছে। তাদের মেয়াদ অনেক আগে শেষ হলেও জেলায় ইউনিট কমিটির অর্ধেকও শেষ করতে পারেনি। যে কারণে এসব জেলার সম্মেলন হয়নি। কমিটি গঠনে স্থানীয় প্রভাবশালীদের তৎপরতা কিংবা কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের কারণে প্রবল হয়েছে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও গ্রুপিং। যার প্রভাব পড়েছে আন্দোলনেও।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে হরতাল, অবরোধ, গণসংযোগ কর্মসূচিতে মাঠে দেখা যায়নি অধিকাংশ জেলার শীর্ষ নেতাদের। যা নিয়ে তৃণমূলেও ক্ষোভ-অসন্তোষ বিরাজ করছে।

দলটির সাংগঠনিক জেলাগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এসব তথ্য।

নির্বাচনের আগে প্রায় আড়াই মাসের আন্দোলনে সাংগঠনিক জেলা নেতাদের ভূমিকা নিয়ে একটি পর্যবেক্ষণের বিষয়ে একাধিক স্থায়ী কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কথা বলতে রাজি হননি।

তবে তারা জানিয়েছেন, তখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূলে ছিল না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গণহারে গ্রেফতার করেছেন। রাস্তায় বের হলেই লাঠিচার্জ, গুলি ও গ্রেফতার করেছে। এমনকি নেতাকর্মীদের পরিবারও ছিল আতঙ্কে। তাছাড়া বিএনপিকে ভাঙারও একটি ষড়যন্ত্র ছিল। সবকিছু বিবেচনায় হয়তো অনেকে মাঠে নামেননি। তবে রাজপথে যারা ছিলেন তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

জানা গেছে, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরদিন পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন নিয়ে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় জেলাসহ ইউনিটের শীর্ষ নেতাদের কার কোথায় ভূমিকা তার রিপোর্ট দিয়েছে হাইকমান্ডকে।

তবে রিপোর্ট তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত কিছু নেতার ভূমিকা নিয়ে সাধারণ কর্মীদের প্রশ্ন প্রকট।

ওই সময়ে আন্দোলন মনিটরিং করেছেন হাইকমান্ডের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন নেতা।
তাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, আন্দোলনে দশ সাংগঠনিক বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক জেলার ভূমিকা সন্তোষজনক। তবে চট্টগ্রাম বিভাগের উত্তর জেলার আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক, দক্ষিণের সদস্য সচিব, রাঙ্গামাটি ও কক্সবাজারের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে মাঠে দেখা যায়নি, ময়মনসিংহ বিভাগের দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক, নেত্রকোনার সদস্য সচিব ও শেরপুরের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন না। সিলেট জেলা সভাপতি অধিকাংশ সময় ঢাকা ছিলেন, মাঝে মাঝে এলাকায় গিয়ে দু-একটা কর্মসূচিতে শরিক হন, হবিগঞ্জের আহ্বায়ক বিদেশে। রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, সৈয়দপুরের শীর্ষ নেতারাসহ আরও কয়েকটি জেলার শীর্ষ নেতৃত্বকে মাঠে দেখা যায়নি। যদিও রংপুর জেলার সদস্য সচিব ১০ বছরের সাজা নিয়েও সার্বক্ষণিক মাঠে ছিলেন।

হাতেগোনা কিছু জেলা ছাড়া অধিকাংশ জেলায় মিছিল হয়েছে শুধু ছবি তুলে বিএনপি মিডিয়া সেলে ও একটি নির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠিয়ে দেয়ার জন্য। থানা-জেলারও অনেক নেতা ঢাকায়, এমনকি দেশের বাইরে অবস্থান করেছেন।

সাবেক সংসদ-সদস্য, প্রভাবশালী সংসদ-সদস্য প্রার্থী যারা প্রতিনিয়ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছেন তাদের মধ্যেও অনেকে ঢাকায় ছিলেন। তাদের উপজেলা এবং জেলাতে উল্লেখযোগ্য কোনো কর্মসূচি পালিন হয়নি।
মনিটরিংয়ের নামে নিরাপদ দূরত্বে ছিলেন অনেকে।

সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যেও অধিকাংশ সংশ্লিষ্ট বিভাগে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি। নেতাকর্মীরা কারও কারও ফোন বন্ধ পেয়েছেন।

আর্থিক বিষয়ে দল থেকে দায়িত্বপ্রাপ্তরা বেশিরভাগ জেলায়ই যাকে আর্থিকভাবে সাপোর্ট দেয়া দরকার তাকে দেননি। যা দিয়েছেন তাদের পছন্দের লোকদের, প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগণ্য। তবে অধিকাংশ সাংগঠনিক জেলার দুই শীর্ষ নেতা ছাড়া কমিটির অনেকে মাঠে ছিলেন। এমনকি বেশ কিছু জেলায় পদবিহীন ও সাবেক নেতাদেরকেও নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে।

ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ সক্রিয় ছিলেন। তিনি সংশ্লিষ্ট সব সাংগঠনিক জেলার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন ও নানা নির্দেশনা পৌঁছে দিয়েছেন। তাকে জেলার নেতারাও সব সময় পেয়েছেন।
এ বিভাগের মধ্যে আন্দোলনে সবচেয়ে ভালো ভূমিকা পালন করেছে মানিকগঞ্জ জেলা। এ জেলার দুই শীর্ষ নেতার তৎপরতা ছিল।

ঢাকার দুই মহানগরে তেমন আন্দোলন করতে পারেনি। যদিও দুই মহানগরের শীর্ষ চার নেতার মধ্যে তিনজনকেই গ্রেফতার করা হয়। উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে ছিলেন। তবে দক্ষিনের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বাইরে থাকলেও তাকে মাঠে পাননি। কিন্তু তাকে জুম মিটিংয়ে পাওয়া গেছে।

ঢাকার আদালত অঙ্গনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে যারা আইনজীবী তারা কর্মসূচি পালন করেছেন। এর বাইরে ঢাকা মহানগরীতে কয়েকজন কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতা চার-পাঁচ দিন কর্মসূচি পালন করলেও নিয়মিত মাঠে ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম ও সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল।

ঢাকা জেলায় সাধারণ সম্পাদক মাঠে তৎপর থাকলেও সভাপতি মাত্র কয়েকদিন সাভারে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন।
গাজীপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক পুরো আন্দোলনের সময় একদিনও এলাকায় যাননি, সভাপতিকে কয়েকটি মিছিলে দেখা যায়। জেলার সাধারণ সম্পাদককে একদিন মিছিলে দেখা গেছে।
মুন্সীগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক এলাকায় যাননি, ফোনও বন্ধ ছিল। আর সভাপতি অসুস্থ থাকায় বিদেশে রয়েছেন।
টাঙ্গাইল জেলার শীর্ষ নেতাদের উল্লেখ করার মতো কোনো ভূমিকা ছিল না।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ও জেলায় বিছিন্নভাবে কর্মসূচি পালন করা হয়।
নরসিংদীর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার হন। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে তেমন তৎপরতা দেখাতে পারেননি এই জেলার বিএনপি নেতারা।

কুমিল্লা বিভাগের মধ্যে কুমিল্লা উত্তর ও মহানগরের কর্মসূচি মাঝে মাঝে পালন হয়েছে। দক্ষিনের আহ্বায়ককে আন্দোলনের পুরো সময় স্থানীয় নেতাকর্মীরা পাননি।
চাঁদপুরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকে মাঠে দেখা যায়নি। তবে উপজেলাগুলোতে সংসদ-সদস্য প্রার্থীরা কর্মসূচি পালন করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কমিটির নেতাদেরও মাঠে দেখা যায়নি।

ফরিদপুর বিভাগের মাদারীপুরের সাধারণ সম্পাদক এবং ফরিদপুরে যুগ্ম আহ্বায়ক স্বপন ও জুয়েল মাঠে থাকলেও শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জের শীর্ষ দুই নেতা এলাকায় যাননি।
রাজবাড়ী জেলায় নেতাকর্মীরা দুভাগে বিভক্ত। জেলা কমিটির ভূমিকা না থাকলেও সাবেক সভাপতি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম এবং সাবেক সেক্রেটারি হারুন অর রশিদ মাঠে ছিলেন।

বরিশালে বিভাগের মধ্যে বরিশাল উত্তরের দুই শীর্ষ নেতার মাঠে ভূমিকা দেখা যায়নি।
মহানগরের সদস্য সচিবসহ অধিকাংশ যুগ্ম আহ্বায়কের ভূমিকা ছিল রহস্যময় ও দক্ষিনের আবুল হোসেন মাঠে থাকার চেষ্টা করেছেন। তবে মহানগরে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়া সিকদার নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে ছিলেন।
পিরোজপুরের সদস্য সচিব ঢাকা থেকে গ্রেফতার হন, আহ্বায়ক মাঠে ছিলেন না।
বরগুনায় কোনো কমিটি নেই। তবে এ জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক হালিমের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা সক্রিয় ছিলেন।
পটুয়াখালীর আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে মাঠে দেখা যায়নি। তারপরও সদর, দশমিনা, গলাচিপায় ভালো আন্দোলন হয়েছে।
ঝালকাঠিতে কোর্টের পাশে নামমাত্র কর্মসূচি পালন করেছে।

খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে ছিলেন এবং জেলার নেতারাও তাকে সব সময় পেয়েছেন।
এ বিভাগের নড়াইল, যশোর, ঝিনাইদহের নেতারা সক্রিয় ছিলেন।
খুলনা জেলা ও মহানগর মিলে বেশিরভাগ কর্মসূচি পালন করেছে।
বাগেরহাট, সাতক্ষীরার শীর্ষ নেতারা, নড়াইলের সভাপতি, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরের শীর্ষ নেতাসহ অধিকাংশই মাঠে ছিলেন না।
কুষ্টিয়ার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জেলে যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্তদের নেতৃত্বে প্রতিদিনই বিক্ষোভ হয়েছে।

রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ৫ ডিসেম্বর কারামুক্ত হওয়ার পর অসুস্থ থাকলেও বিভাগীয় জেলার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। পৌঁছে দিয়েছেন নানা নির্দেশনাও।
তবে এ বিভাগের বগুড়া এবং সিরাজগঞ্জের শীর্ষ নেতা ছাড়া অধিকাংশ জেলার বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা মাঠে ছিলেন না।
পাবনা জেলার আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব দুজনই গ্রেফতার হন, জেলা ও থানার নেতারা ঢাকায় অবস্থান করেছেন। পরে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসকে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়ার পর আন্দোলন জোরালো হয় এ জেলায়। জয়পুরহাটে ওবায়দুর রহমান চন্দন (রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক) ও ফয়সাল আলীম (নির্বাহী কমিটির সদস্য) গ্রুপের দ্বন্দ্ব প্রকট। কমিটির নেতারা জেলা সদরের অদূরে কর্মসূচি পালন করেছেন। অধিকাংশ উপজেলায় সাবেক এমপি মোস্তফা ও ফয়সাল আলীম এবং যুগ্ম আহ্বায়ক ওহাবের নেতৃত্বে কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে।
রাজশাহী মহানগরে মিজানুর রহমান মিনু-মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলসহ কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠে থেকে কয়েকদিন কর্মসূচি পালন করেন। মহানগরের আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিবের নেতৃত্বে কর্মসূচি পালন হয়েছে। জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মার্শাল ঢাকা থেকে গ্রেফতার হয়, সদস্য সচিব বিশ্বনাথ রাজশাহী থাকলেও পুরো জেলার নেতারা নিষ্ক্রিয় ছিলেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আহ্বায়ক ঢাকায় ছিলেন, সদস্য সচিব কয়েকদিন কর্মসূচি পালন করেছেন। তবে এ জেলায় সাবেক সংসদ-সদস্যরা বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেন। নাটোর সদরে কর্মসূচি পালন করেছে, আন্দোলনের মধ্যে এ জেলার আহ্বায়ক চিকিৎসার জন্য ভারতে ছিলেন। আন্দোলনে আহত নেতাকর্মীদের খোঁজও জেলার নেতারা রাখেননি, জেলার সংসদ-সদস্য প্রার্থীরা এমনকি থানার নেতারা অনেকে ঢাকা এবং বিদেশে অবস্থান করেছেন।
বগুড়ার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠে সক্রিয় ছিলেন। সদর, গাবতলী, শেরপুরে প্রতিদিনই কর্মসূচি পালন হয়। তবে অন্যান্য থানার দায়িত্বশীল নেতারা অধিকাংশ সময় ঢাকায় ছিলেন।
নওগাঁ জেলার সদর, মহাদেবপুর, বদলগাছী ছাড়া কোথাও তেমন কোনো কর্মসূচি পালিত হয়নি। জেলার শীর্ষ নেতা, সাবেক সংসদ-সদস্য ও সংসদ-সদস্য প্রার্থী এমনকি থানা-উপজেলা-পৌরসভার শীর্ষ নেতারা মাঠে সক্রিয় ছিলেন না। অনেকে ঢাকায় অবস্থান করেছেন।

কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা জানান, বিএনপির অধিকাংশ সাংগঠনিক জেলায় আহ্বায়ক কমিটি রয়েছে। প্রায় সব কমিটিই মেয়াদোত্তীর্ণ। এসব কমিটিকে ৩ মাস দেয়া হলেও নানা অজুহাতে তারা বছরের পর বছর পার করছে। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট জেলা কমিটি থানা থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত সব পর্যায়ে নতুন নেতৃত্ব গঠন করবে। পরে সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা কমিটি হবে। কিন্তু ইউনিট পর্যায়ে কমিটি গঠনের ৩০ ভাগও কাজ শেষ হয়নি। বেশ কয়েকটি জেলা ও ইউনিট কমিটি গঠনে ত্যাগী ও যোগ্যদের বাদ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে অসন্তোষ বেড়েছে। আবার অনেক ত্যাগী নেতা স্বেচ্ছায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। এতে তৃণমূলে আরও কোন্দল ও বিভক্তি বেড়েছে। যার প্রভাব আন্দোলনে পড়ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘এই সরকার একদলীয় শাসনের মাধ্যমে এমন একটি শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, সেখানে কাউন্সিল পর্যন্ত করা সম্ভব হয়নি। জেলায় কাউন্সিল করতে গেলে হয় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী আক্রমণ করেছে অথবা পুলিশ ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে কাউন্সিলকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এভাবে নানা কায়দায় পুনর্গঠন প্রক্রিয়া সরকার ব্যাহত করেছে। বিএনপি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বড় দল। দলের পুনর্গঠন একটি চলমান প্রক্রিয়া। আন্দোলনের পাশাপাশি পুনর্গঠন প্রক্রিয়াও চলবে।’
সূত্র:যুগান্তর