কলারোয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীকে মারপিটের ঘটনায় ৯ জনকে আসামী করে মামলা

কলারোয়ার সোনাবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলমগীর আজাদকে পিটিয়ে জখম করার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। আলমগীর আজাদের সহধর্মীনি তাসকিরা সুলতানা বাদী হয়ে গত ২৯ মার্চ মামলাটি করেছেন। মামলা নং- ৪৭। মামলায় ৯ জনকে আসামী করা হয়েছে।

আলমগীর আজাদ বর্তমানে কলারোয়া সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি উপজেলার বড়ালী গ্রামের মৃত গোলাম জব্বার বিশ্বাসের ছেলে। গত ২৭ মার্চ শনিবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাদরা মোড়ে তিনি হামলার শিকার হন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আলমগীর আজাদ তার চশমা প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে মাদরা মোড়ে পৌঁছালে একদল যুবক অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় রক্তাক্ত ও মারাত্মকভাবে জখম হন আলমগীর আজাদ।

আলমগীর আজাদের সহধর্মীনি তাসকিরা সুলতানা বলেন, পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষকরা আমার স্বামীর উপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। ঘটনার পরপরই রক্তাক্ত ও গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে কলারোয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তাসকিরা সুলতানা আরও বলেন, প্রতিপক্ষকরা আগে থেকেই আমার স্বামীকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকি দিয়ে আসছিল। কিন্তু নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ানোয় তারা সম্পূর্ণ হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালিয়েছে।

হামলার শিকার স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আলমগীর আজাদ বলেন, ঐ রাতে আমার নির্বাচনী কাজ শেষ করে মটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে মাদরা মোড়ে পৌছালে অত্র ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বর কামরুজ্জামান কামু ও মোস্তাক নামে দু’জন আমার গতিরোধ করে। এসময় ফিল্মিস্টাইলে মুহূর্তেই বেশ কয়েকজন যুবক হাজির হয়ে আমাকে এলােপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লোহার রড দিয়ে পিটাতে থাকে। নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বেনজির হোসেন হেলালের সামনেই তারা আমাকে এমন অমানুষিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। মারধরের এক পর্যায়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।

হঠাৎ করে কেন পরিবেশ উত্তপ্ত, এমন প্রশ্নের জবাব আলমগীর আজাদ বলেন- হঠাৎ করে নয়, তারা আরও আগে থেকেই আমাকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। আমি তাদের হুমকিকে পাত্তা না দিয়ে নির্বাচনী লড়াই চালিয়ে যাওয়ায় তারা আমার উপর এমন নির্মম আক্রমণ করেছে।

এবিষয়ে কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মীর খায়রুল কবিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৯ জনকে আসামী করে ইতোমধ্যে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে তদন্তধীন রয়েছে। তদন্তপূর্বক দ্রুত আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অন্যদিকে, ওই একই দিন গত ২৭ মার্চ (শনিবার) সন্ধ্যায় সোনাবাড়ীয়া প্রাইমারী স্কুল মাঠে ৫নং দক্ষিণ সোনাবাড়ীয়া ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য ও আসন্ন নির্বাচনেও ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী নূরুল ইসলাম প্রতিপক্ষের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় কলারোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নিজের প্রয়োজনীয় কাজে ইউপি সদস্য নূরুল ইসলাম ওইদিন সন্ধ্যার দিকে সোনাবাড়ীয়া প্রাইমারী স্কুল মাঠে এলে ৩/৪ জন যুবক জনসম্মুখে তাকে নানাভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং খুন জখমের হুমকি দেন।

এব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানান কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মীর খায়রুল কবির।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক জনপ্রতিনিধি বলেন, নির্বাচন যতো ঘনিয়ে আসছে পরিস্থিতি যেন ততো উত্তপ্ত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারীরা এলাকায় ত্রাশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। অন্যান্য প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালাতে প্রতিনিয়তই বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। যেটি ক্ষমতাসীন দলের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন করছে।

সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বেনজির হোসেন হেলাল জানান, চেয়ারম্যান প্রার্থীর (আলমগীর আজাদ) মাদকের সংশ্লিষ্টতা আছে এটি এলাকার সকলেই জানে। শুনেছি ঘটনার দিন রাত একটার সময় তিনি যাচ্ছিলেন সেই সময় অন্য আরেক ব্যবসায়ীর সাথে বাকবিতান্ডায় জড়িয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে হাতাহাতির সময় হেলমেটে গুতা লাগে । অনেকে বলছে থাম্বায় আঘাত লাগে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করছে সেটা সত্য নয়।

সোনাবাড়ীয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রাজু আহম্মেদ বলেন, আলমগীর আজাদ মাদকাসক্ত সেজন্য তাকে যুবলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল। ঘটনার দিন নেশা করে বাড়ি ফেরার সময় বিদ্যুতের খুটিতে ধাক্কা খেয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কেটে গেছে এখন অন্যের উপর দোষ চাপাচ্ছেন।