কুড়িগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা সন্মানী দিয়ে গণগ্রন্থাগার করেছেন বীরমুক্তিযোদ্ধা বীরপ্রতীক আব্দুল হাই

মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহন করে দেশকে শত্রুমুক্ত করেছেন। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষনে উদ্বুদ্ধ হয়ে কিশোর বয়সে জীবনমায়া ত্যাগ করে হাতে তুলে নিয়েছিলেন রাইফেল। সম্মুখযুদ্ধে পরাস্ত করেছেন পাক সেনাদের।মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ কোম্পানী কমান্ডার। যুদ্ধে আহত হয়ে পেয়েছেন বীর প্রতীক খেতাব।

কুড়িগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা বীরপ্রতীক আব্দুল হাই জীবনের পড়ন্ত সময়ে মুক্তিযোদ্ধা সন্মানী থেকে ২০২২ সালে নিজ বাসভবনে গড়ে তুলেছেন একটি গণগ্রন্থাগার। স্বপ্ন দেখেন সরকারী সহযোগিতায় তার জীবদ্দশায় গ্রন্থাগারটি মাথা ঊচু করে দাঁড়াবে। আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে ভুমিকা রাখবে।

কুড়িগ্রামের মুক্তারামে নিভৃত পল্লীতে বাস করেন মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনা বীর প্রতীক আব্দুল হাই। মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে ছিলেন অসীম সাহসী বীর। সক্রিয় যুদ্ধে পাক সেনাদের গুলিতে আহত হয়েছেন। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম হানাদারমুক্ত হয়। সেদিন কুড়িগ্রামে ওভারহেড পানিরট্যাংকির উপর স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। দেশকে স্বাধীনতার লালসূর্য উপহার দিয়েছেন। নিজে মাত্র ৭ সতক জমির মালিক তিনি কিন্তু মনটা অনেক বড়। তাই নিজ জায়গায় আগামী প্রজন্মের কথা চিন্তা করে গড়ে তুলেছেন নিজ নামে একটি গণ গ্রন্থাগার।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সোনালী ইতিহাস আর স্বাধীনতা যুদ্ধের রক্তক্ষয়ী দগদগে স্মৃতিগুলো বুকে লালন করেন। স্বপ্ন দেখেন আগামী প্রজন্মকে নিয়ে আর তাই বসতভিটায় মুক্তিযোদ্ধা সন্মানি থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন গ্রন্থাগারটি।

ছোট ছোট সোনামনিরা প্রতিদিন আসছে তার গ্রন্থাগারে।এখানে এসে তারা মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানীকে যেমন দেখছে তেমনি জীবন্ত ইতিহাস জানছে আগামী প্রজন্ম।

বীর মুক্তিযোদ্ধা,বীর প্রতীক আব্দুল হাই,জানান আর্থিক কারনে এখনও গ্রন্থাগারটিকে একদিকে ইট সিমেন্টের গাঁথুনি দেয়া সম্ভব হয়নি তেমনি সব বইগুলোকে তাকে সাজিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি।এখানে প্রায় ২ হাজার বই রয়েছে।বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষনে যে প্রেরণা তিনি পেয়েছিলেন,মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহন করে বাংলাদেশকে গড়ার যে স্বপ্ন তা ছড়িয়ে দিতে চান নতুন প্রাণে। আগামীর প্রজন্ম তার এই গণগ্রন্থাগার থেকে মুক্তিযুদ্ধ,বাংলাদেশ ও দেশের সঠিক ইতিহাস জানবে ও হৃদয়ে লালন করবে এ প্রত্যাশা তার।

জীবনের শেষ দিনগুলোতে এই বীরসেনা স্বপ্ন দেখেন সরকারী বেসরকারী সহযোগিতায় গণ গ্রন্থাগারটি মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাবে।
কুড়িগ্রামে সূধী সমাজ ও আপামর জনতা চান এই জীবন্ত মুক্তিযোদ্ধার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হোক তার জীবদ্দশাতে।