খাগড়াছড়িতে শিক্ষক হত্যা ও হেনস্থার প্রতিবাদে মানববন্ধন

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় ঢাকা আশুলিয়া হাজী ইউনুস আলী স্কুল এন্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক উৎপল কুমার সরকারের নির্মম ও বর্বরোচিত হত্যাকান্ড এবং নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতোর মালা পড়িয়ে লাঞ্চনার ঘটনার জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।

রোববার (৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টায় খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবেব সামনে মানববন্ধন করে বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতি, শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ দীঘিনালা সরকারি ডিগ্রি কলেজ, বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান শিক্ষক পরিষদ, বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি( বাসমাশিক ) ব্যানারে।

এসময় বাংলাদেশ মাধ্যমিক সরকারী শিক্ষা সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সদস্য চম্পানন চাকমা সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ বেসরকারি মাধ্যমিক সহকারি শিক্ষক সমিতির দীঘিনালা শাখার সভাপতি প্রতিমঙ্গল চাকমা, বাংলাদেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি অংপ্রশ মারমা, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দীলিপ চাকমা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ধনা চন্দ্রসেন, বাংলাদেশ মাধ্যমিক সরকারি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইউসুদ আদনান, বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরিষদের যুগ্ন-সভাপতি সম্পানন চাকমা, দীঘিনালা সরকারি কলেজের প্রভাষক জিমি চাকমা, খাগড়াছড়ি সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক জহিরুল ইসলাম। খাগড়াছড়ি জেলার দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক সুদর্শন দত্ত, খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সভাপতি জিতেন বড়ুয়া, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি অজিন্দ্র কুমার ত্রিপুরা, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সদর উপজেলার সভাপতি ও জেলা সহ-সভাপতি আশা প্রিয় ত্রিপুরা, সদর উপজেলা বাংলাদেশ বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অমরেন্দু চাকমা, সহাকারী শিক্ষক আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি প্রিয় বসু ত্রিপুরা, সদর উপজেলা মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি লায়েস দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ-উর-রহমান, ভাইবোনছড়া মিলিয়াম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাতু মনি চাকমা, প্রাক্তন সভাপতি ও পেরাছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিম্বিসর খীসা, দক্ষিণ খবং পড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজয়া খীসা, চম্পাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনক বরণ ত্রিপুরা প্রমুখ।
এ প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন থেকে শিক্ষক হত্যা, নির্যাতন ও নিপীড়ণের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহŸান জানানো হয়। আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের শারীরিক হেনস্থা ও হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করা হয়। একইসঙ্গে নড়াইলে ইউনাইটেড ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।

এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, শিক্ষকদের হেনস্তা, লাঞ্চিত এবং হত্যা এটা আমাদের জাতি তথা বাংলাদেশের জন্য কলঙ্কজনক ঘটনা। পিতামাতার পরেই যে শিক্ষকদের অবস্থান সেখানে তাদের এ অপমান সহ্য করার মতো নয়।তাই আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই অতি দ্রুুত দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করে একটা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, যেন পরবর্তীতে আর কেউ শিক্ষকদের এভাবে হত্যা, অপমান, হেনস্তা ও লাঞ্ছিত করতে সাহস না করে।যেসব ঘটনা ঘটছে তা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার। আমরা অনেক কিছু অর্জন করেছি, কিন্তু এইসব ঘটনা যখন বিশ্বে প্রচার হবে তখন আমদের মানসম্মান কোথায় যাবে? তাই সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের হেনস্তার প্রতিবাদে কাজ করে যেতে হবে।
খাগড়াছড়ি সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক জহিরুল ইসলাম বক্তব্যে বলেন, আপনি যখন আমনার সন্তানকে প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করিয়ে দেন। তাঁরা সকলে দায়িত্ব শিক্ষকের উপর চাপিয়ে দেন। আপনার সন্তান মানুষ হবে না অমানুষ হবে সেটা লক্ষ্য রাখার জন্য শিক্ষকের দায় করেন। শিক্ষকদের পিটিয়ে মেরে ফেলা গলায় জুতোর মালা পড়িয়ে দেওয়া অসম্মান করা খুবই নেক্কারজনক ঘটনা। শিক্ষককে হেনেস্তা করে মেরে অপমান করে সম্মানটুকু কেড়ে নিয়ে আপনি একটা সুশিক্ষিত জাতি প্রত্যাশা করতে পারে না।
এতে বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি পরিষদ, বেসরকারি সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সরকারি-বেসরকারি কলেজের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষক হেনস্থার প্রতিবাদ ও শিক্ষক সুরক্ষা আইনের দাবি করা হয়েছে।