খালেদাকে প্যারোলে মুক্তির জন্য আলোচনার দরজা খোলা : কাদের

একটি দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি নিয়ে দলটির নেতারা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ ব্যাপারে আলোচনার পথ খোলা বলে জানান তিনি।

রবিবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এই কথা বলেন।

খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি বিষয়ে কাদের বলেন, ‘সেরকম যদি কিছু তারা চান তাহলে তারা প্রাইম মিনিস্টারকে বলতে পারেন। তারাতো আলোচনা করছেন। আলোচনাতো খোলামেলা। আর তার চিকিৎসার বিষয়ে রাজনৈতিভাবে স্টান্ডবাজি করা হয়েছে। বেগম জিয়ার অসুস্থতার বিষয়ে কোনোভাবেই কতৃপক্ষ অবহেলা করেনি। এখনতো চিকিৎসার নিয়ে কোনো কথা নেই।’

খালেদার জামিনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এর আগে প্রায় ৩০ মামলায় বেগম জিয়া জামিন পেয়েছেন। আর যে মামলায় রায় হয়েছে সে মামলা আমরা করিনি, রায়ও আমরা দিইনি। তাই রায়ের বিষয়ে তারা আইনিভাবে আদালতে এগুতে পারে। এটা পুরোটাই আদালতের বিষয়।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মামলার সঙ্গে নির্বাচনকে সর্ম্পকযুক্ত করার তো কোনো যুক্তি নেই। মামলা আমরা করিনি। মামলা বেগম জিয়াকে আমরা দণ্ড দিইনি। আমরা যেখানে দণ্ড দিইনি সেখানে আমরাতো মুক্তি দিতে পারি না। এখন তারা লিগ্যাল যুদ্ধ করুন। আদালতে তারা চেষ্টা করুন। যদি কোনো অপশন ওপেন থাকে তারা আদালতে গিয়ে লিগ্যাল ব্যাটলে যেতে পারেন। কেন? ৩০টির মতো মামলার জামিনতো হয়ে গেছে। সরকার কি বাধা দিয়েছে?’

কাদের বলেন, ‘যে মামলার রায় হয়ে গেছে, দণ্ড দেয়া হয়েছে সেখানে জামিন দেবে কি না এটা উচ্চ আদালত বলতে পারবে। এটা একটা আইনি যুদ্ধ।’

‘ছোট পরিসরে ফের আলোচনা হতে পারে’

আবার সংলাপ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘ছোট পরিসরে আলোচনা করা যায়। ঐক্যফন্টের নেতারাও বলেছেন ছোট পরিসরে আলোচনা করবে। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় তারাই বেশি কথা বলেছেন। লম্বা সময় ধরে তারা কথা বলেছেন। তাদের ২১ জনের মধ্যে সবাই কথা বলেছেন। আর আমাদের মাত্র চারজন কথা বলেছেন।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাকে একটু আগে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু সাহেব জানিয়েছেন, একটি চিঠি আমাদের অফিসে পাঠাচ্ছেন। আমি অফিসে বলে দিয়েছি চিঠি রিসিভ করতে। বিকালে আমি আমাদের দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাপ করবো।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সংলাপে আমরা আর বেশি সময় নিতে চাইছি না। কারণ আমাদের হাতে সময় খুব কম। আমাদের দলের নমিনেশন বিষয়ে ফরমের বিতরণের ঘোষণাসহ বেশকিছু কাজ আছে। ফরম বিতণের পর ইন্টারভিউসহ জোটের সঙ্গে আলোচনাসহ বেশকিছু কাজ আছে।’

সেদিনের সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাদের যারা কথা বলেছেন তারা একাধিকবার কথা বলেছেন। ব্যারিস্টার মওদুদ সাহেব তিনবার কথা বলেছেন।’

সংলাপে দূরত্ব কমেছে বলে মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘দেখুন আলাপ আলোচনার একটি ভালো দিক আছে। সামনাসামনি বসে দেখাদেখিতো হলো, চোখাচোখি হলো। এটাও তো একসময় ছিল না। সেটাতো হলো। আর পরিবেশটা ছিল সৌহাদ্যপূর্ণ এবং খোলামেলা। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের কেউ ইন্টারফেয়ার করতে বলেনি। কাউকে থামিয়ে দেয়া হয়নি। একেবারে স্বাধীনভাবে সেদিন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা কথা বলেছেন।’

‘এখন তারা আবার যদি বসতে চান সেটা আমরা চেষ্টা করবো। ডেট করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এক্ষেত্রে নেত্রীর সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব। তবে আমরা ৭ তারিখের পরে যেতে চাইছি না। কারণ বাংলাদেশেতো রাজনৈতিক দল দুই শয়ের কাছাকাছি। এর মধ্যে অনেকে আবেদন করেছে।’