২৪ ঘণ্টায়

খুলনা বিভাগে করোনায় মৃত্যু ৩০, শনাক্তে রেকর্ড

খুলনা বিভাগে করোনাভাইরাসের প্রকোপ কোনোভাবেই কমছে না। অদৃশ্য এই ভাইরাসে দিন দিন শনাক্ত আর মৃত্যুর রেকর্ড ভাঙছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে খুলনা বিভাগে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে রেকর্ড ১ হাজার ৪৬৪ জনের করোনা হয়েছে।

এদিকে সোমবার (২৮ জুন) পর্যন্ত খুলনায় করোনায় মৃতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। একইসঙ্গে শনাক্তের সংখ্যা ৫৩ হাজার ছাড়িয়েছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক রাশেদা ডা. সুলতানা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

চিকিৎসকরা বলছেন, শুধু লকডাউন অথবা স্বাস্থ্যসেবা বৃদ্ধি করে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন সচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে কুষ্টিয়ায় সর্বোচ্চ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া খুলনায় ছয়জন, মেহেরপুরে চারজন, ঝিনাইদহে চারজন, চুয়াডাঙ্গায় দুজন, বাগেরহাটে দুজন, যশোরে একজন, সাতক্ষীরার একজন এবং নড়াইলে একজন মারা গেছেন।

খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় চুয়াডাঙ্গায় গত বছরের ১৯ মার্চ। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৫৩ হাজার ৬৩১ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ১১ জন। এ সময় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৯৭৮ জন।

খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. শেখ সাদিয়া মনোয়ারা ঊষা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা জেলার ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া খুলনা জেলা ও মহানগরীতে ৭৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৯৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। যা মোট নমুনা পরীক্ষার ৪০ শতাংশ।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের জেলাভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় খুলনা জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩১১ জনের। এ পর্যন্ত মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৪ হাজার ৯৪৩ জনের। এ সময় মারা গেছেন ২৪৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৬১১ জন।

এ ছাড়া বাগেরহাটে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১২৪ জনের। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ১৮৩ জনের। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২৩৩ জন।

সাতক্ষীরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ২৬ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৩০০ জন এবং মারা গেছেন ৬৭ জন। এ সময় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ৩৭৩ জন।

যশোরে গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের সর্বোচ্চ করোনা শনাক্ত হয়েছে । নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৪৫৪ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১১ হাজার ৭৭৯ জন। মোট মারা গেছেন ১৩৪ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৮৮৯ জন।

ঝিনাইদহে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১৪৩ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ১৩৭ জন। মোট মারা গেছেন ৮৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯৮০ জন।

মাগুরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৫০৬ জন। মোট মারা গেছেন ২৫ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ২৩৮ জন।

নড়াইলে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৫৩ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৫৮১ জন। মোট মারা গেছেন ৪১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯৬১ জন।

কুষ্টিয়ায় একদিনে বিভাগে সর্বোচ্চ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে । ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১৭২ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ৩৫৬ জন। মোট মারা গেছেন ১৯৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৩৯৫ জন।

চুয়াডাঙ্গায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৮৪ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ১৬৭ জন। মোট মারা গেছেন ৮৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ১৬২ জন।

মেহেরপুরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৭৫ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৬৭৬ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ১৩০ জন।

খুলনার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। শুধু চিকিৎসাসেবা বা বিধিনিষেধে কাজ হবে না। মানুষকে সচেতন হতে হবে। সার্বক্ষণিক মাস্ক পরিধান করতে হবে। মাস্ক পরিধানের কোনো বিকল্প নেই।