গৌড়মতি আমে নতুন সম্ভাবনা, মণ ১২ হাজার

দেশের বেশির ভাগ জাতের আমের জোগান যখন শেষ হয়, ঠিক তখনই পাকতে শুরু করে গৌড়মতি। আমটি যেমন রসালো, তেমনি সুস্বাদু। এই নাবি জাতের আম চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাবু আলী নামে এক চাষি। গৌড়মতি আম আট থেকে ১২ হাজার টাকা মণ বিক্রি করছেন তিনি।

কৃষি বিভাগ বলছে, গৌড়মতি আমে অর্থনৈতিকভাবেও দেখা দিয়েছে নতুন সম্ভাবনা। কারণ মৌসুম শেষে বাজারে আসায় দামও বেশি পাওয়া যাচ্ছে।

শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিকেলে সদর উপজেলার আমনুরা রোডের জামতলাবাজার এলাকার বাবু আলীর আমিরা এগ্রো ফার্মে গিয়ে দেখা যায়, ২০ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে গৌড়মতি আমের বাগান করেছেন তিনি। বাগানে প্রায় দুই হাজার আমের গাছ রয়েছে। গত ১০ দিন থেকে এই আম দেশের বিভিন্নস্থানে সরবরাহ করছেন তিনি। এরই মধ্যে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছেন। আশা করছেন, আরও ১৫ লাখ টাকার আম বিক্রি করবেন।
আমিরা এগ্রো ফার্মের মালিক বাবু আলী বলেন, পাঁচ বছর আগে ৩২ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে বিভিন্ন ফলের বাগান গড়ে তুলেছি। এর পরে তিন বছর আগে ২০ বিঘা জমিতে দুই হাজার গৌড়মতি আমের গাছ লাগিয়েছিলাম। গতবছর থেকেই এ গৌড়মতির গাছে আম আসতে শুরু করেছে। গত বছর প্রায় আট লাখ টাকার আম বিক্রিও করেছি। তবে এবার আশা করছি, ২০ লাখ টাকার বেশি আম বিক্রি করতে পারব। যতদিন যাবে গাছ আরও বড় হবে। আমের ফলনও বাড়বে বলে আশা করছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা এই আম এ জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে সরবরাহ করছি। বর্তমানে গৌড়মতি আম ৮ থেকে ১২ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।

শাহিদ নামে এক কলেজছাত্র বলেন, কিছুদিন আগে শুনেছি এই বাগানে গৌড়মতি আম পাওয়া যায়। তাই আজকে এক হাজার টাকায় পাঁচ কেজি আম কিনলাম। এই আম খুবই সুস্বাদু।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) রাজিবুর রহমান বলেন, আমটির প্রথম সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জে। তাই বাংলার প্রাচীন এই জনপদের নাম থেকে ‘গৌড়’ আর মূল্য বিবেচনায় রত্নের সঙ্গে তুলনা করে ‘মতি’ শব্দের সমন্বয়ে নতুন জাতের এই আমটির ২০১৩ সালে নামকরণ করা হয়েছিল ‘গৌড়মতি’।

তিনি বলেন, এটি একটি নাবি জাতের আম। সারাদেশের আমের জোগান যখন শেষ হয়, তখনই পাকতে শুরু করে এই গৌড়মতি। এই আম অত্যন্ত সুস্বাদু। আর যেহেতু সব আমের শেষে পাকে এই তাই দামও বেশ ভালো পান চাষিরা। এই আম জেলার জন্য একটি নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।