গ্রামীণফোনের বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবস উদযাপন

দায়িত্বশীল করপোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবস উদযাপন করেছে গ্রামীণফোন। দিবসটি লক্ষ্যে প্রকৃতি রক্ষা ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে গ্রামীণফোনের নেচার অ্যান্ড সোসাইটি ক্লাব সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের নিয়ে দুই দিনব্যাপী বৃক্ষমেলার আয়োজন করে। এ আয়োজনে ‘ফস্টারিং আ গ্রিন অ্যান্ড সাস্টেইনেবল এনভায়রনমেন্ট’ শীর্ষক এক আলোচনায় অংশ নেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও কৃষি উন্নয়ন কর্মী শাইখ সিরাজ।

বিশ্বায়নের এই যুগে কার্বন নিঃসরণ এক গুরুতর বৈশ্বিক সঙ্কটে পরিণত হয়েছে। নিজেদের কার্যক্রমে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছে গ্রামীণফোন। প্রতিষ্ঠানটির বিশ্বাস, জলবায়ু সমস্যা সমাধানের অংশ হিসাবে শহরে বাসাবাড়িতে ছাদ বাগান কার্যক্রমের মত নগর-কৃষির বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের এখনই সময়।

অনুষ্ঠানে শাইখ সিরাজ টেকসই পরিবেশের জন্য বাগান করার অভ্যাস গড়ে তোলা এবং বৃক্ষরোপণের তাৎপর্যের উপর জোর দেন, যা গ্রামীণফোনেরও অন্যতম প্রতিপাদ্য। তিনি শহরে বাসাবাড়িতে বারান্দা বা ছাদের ফাঁকা স্থানে বাগান গড়ে তোলার মত বিভিন্ন টেকসই অনুশীলনের উপরও আলোকপাত করেন, যা ব্যক্তি ও পরিবেশ উভয়ের উপরই উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।

পরিবেশ এবং এর সাথে সম্পর্কিত বিষয় সমূহকে সবসময় নিজেদের কৌশলগত পরিকল্পনার মূলে বিবেচনা করে গ্রামীণফোন। দায়িত্বশীলভাবে ব্যবসা পরিচালনায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানটি এর সকল অংশীজন ও সমাজের কল্যাণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। সেইসাথে, জাতির ক্ষমতায়ন ও টেকসই প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দক্ষতার উন্নয়ন ও ডিজিটাল সক্ষমতা তৈরিতেও প্রতিষ্ঠানটি কাজ করে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায়, এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইএমএস) ব্যবস্থার মাধ্যমে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে নিজ প্রতিষ্ঠানের কার্বন (সিওটু) নিঃসরণের মাত্রা ২০১৯ সালের মাত্রার তুলনায় অর্ধেকে কমিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে গ্রামীণফোন। দেশে ডিজিটাল বৈষম্যের মাত্রা কমিয়ে আনতে প্রতিষ্ঠানটি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসমূহে ১২শ’টি সৌরবিদ্যুৎ চালিত টাওয়ার স্থাপন করেছে।

শাইখ সিরাজ বলেন, ‘প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কল্যাণে এখন তরুণ প্রজন্ম কৃষি ও নগর কৃষির সাথে সম্পৃক্ত হতে পারছে। আগামীতে কৃষিজ উৎপাদন আরো বহুগুণ বাড়বে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনার কাছে একটি মোবাইল ফোন আছে এবং আপনি আইওটি’র সাথে সংযুক্ত। কেবল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমেই এখন আপনার গাছে পানি দেওয়া প্রয়োজন কি না, সে সম্পর্কে নোটিফিকেশন পাবেন। আমরা প্রতিনিয়ত উন্নয়নের পথে হাঁটছি এবং কৃষিখাতেও এখন আমাদের মনোযোগ রয়েছে। আইওটি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মত নতুন নতুন প্রযুক্তি নিয়মিতভাবে আবির্ভূত হচ্ছে। যদি আমাদের কৃষিকাজে এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায়, তাহলে নিঃসন্দেহে গোটা কৃষি ব্যবস্থা এক ধাপ এগিয়ে যাবে এবং উৎপাদনশীলতা বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। তাই, এই দিকগুলো নিয়ে আমাদের সবার একসাথে কাজ করতে হবে।’

গ্রামীণফোনের প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা সৈয়দ তানভির হোসেন বলেন, ‘আমরা যদি পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণে স্মার্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতা তৈরিতে ব্যর্থ হই, তাহলে স্মার্ট নাগরিক গড়ে তোলা অসম্ভব হবে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বর্তমানের সম্ভাবনাকে কাজ লাগিয়ে জনসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি টেকসই উপায়ে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন জলবায়ু সংরক্ষণমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে গ্রামীণফোন। সেই সাথে, আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পৃথিবীকে আরো বাসযোগ্য করে তুলতে চাই, শিক্ষার মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়ন ঘটাতে চাই এবং তাদেরকে ডিজিটাল দক্ষতায় অনন্য করে তুলতে চাই। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যদি আমাদের উপহার দেওয়ার মত কিছু থাকে, সেটি হবে একটি সবুজ ও নিরাপদ পৃথিবী। শাইখ সিরাজের অংশগ্রহণে আমাদের সেশনটি ঠিক এই প্রসঙ্গেই আলোকপাত করেছে এবং আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখিয়েছে।’

পরিবেশ সংরক্ষণ ও সবুজ ভবিষ্যৎ গঠনের প্রত্যয়কে সমুজ্জ্বল রেখে রাজধানীর আনসার ক্যাম্পে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। শাইখ সিরাজ এবং গ্রামীণফোনের প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা সৈয়দ তানভির হোসেন উভয়েই উপস্থিত থেকে আয়োজনকে সফল করে তোলেন। এছাড়াও, ০২ ও ০৩ আগস্ট তারিখে জিপি হাউস প্রাঙ্গণে আয়োজিত হয় ‘বৃক্ষ মেলা।’ গ্রামীণফোনের কর্মীবৃন্দ ব্র্যাক নার্সারি ও ফয়সাল নার্সারি থেকে বিভিন্ন শোভাবর্ধনকারি ও ফলজ বৃক্ষ থেকে পছন্দ অনুযায়ী গাছ কিনে নেন।