চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে প্রতিবেশীকে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে প্রতিবেশীকে একাধিক মিথ্যা বানোয়াট মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। একটি বসবাস উপযোগী জমি কিনে নেয়াকে কেন্দ্র করে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ছাড়াও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণনাশের ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এনিয়ে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) ভুক্তভোগী পরিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের একটি অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের উমরপুর গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলীর ছেলে ও শ্যামপুর ইউসি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. খাইরুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার স্ত্রী, এক ভাবী ও চার ভাতিজা মিলে দক্ষিণ উমরপুর মৌজার ৪০২, ও ৪০৩ নম্বর দাগের ১১. ৪৩ শতক জমি কিনে নেয় এরফান, মহবুল, সহবুল, দুলিশারা, ঝিরিনা ও ফিনিয়ারার কাছ থেকে। ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর ১৪ লাখ টাকায় জমিটি কিনে নেয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী কবির হোসেনের স্ত্রী মোসা. রেখা বেগম আমাদেরকে নানাভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমার স্ত্রী মুর্শিদা, ভাবী হাসিনা, ভাতিজা আব্দুল বাসির, মাসুদ রানা, ইব্রাহিম আলী ও শাহজাহান এই ছয়জন ১১ শতক জমির প্রকৃত মালিক। অথচ এই জমি থেকে আমাদেরকে তাড়িয়ে দিতে দীর্ঘদিন থেকে নানারকম ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে রেখা বেগম। এমনকি আমাদেরকে হয়রানি করতে এখন পর্যন্ত ৩টি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। মিথ্যা মামলা দেয়ায় এডিএম কোর্টে নিষ্পত্তি হলেও তারা ক্ষান্ত হয়নি। পরে একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করেই চলেছে।

খাইরুল ইসলাম অভিযোগ করে আরও বলেন, গত বছরের শেষের দিকে রেখাকে মারধরের একটি মিথ্যা মামলায় আমাকে গ্রেফতার করা হয়। আমি ও জমির মালিক আমার ভাতিজা আব্দুল বাসির কারাগারে থাকা অবস্থায় সেখানকার জমিতে থাকা সবগুলো গাছপালা কেটে ফেলেছে রেখা ও তার পরিবারের লোকজন। এসময় ১০-১৫ বান্ডিল টিন ভাংচুর করে ও ১০০টি ক্যারেট নিয়ে গেছে। এনিয়ে থানায় অভিযোগ দিলেও কোন সুরাহা পায়নি। আমরা মিথ্যা মামলার হয়রানি থেকে অব্যাহতি চাই।

মামলার আরেক আসামী ও খাইরুল ইসলামের ভাতিজা আব্দুল বাসির বলেন, আমি কোন অপরাধ না করেও রেখা বেগমের দায়ের করা মামলায় ১৭ দিন জেলে ছিলাম। মামলায় আমার বাবার নাম মিল না থাকলেও আমাকে গ্রেফতার করা হয়। ভিক্তিহীন তথ্যে উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জমির অন্যতম মালিক কামাত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যলয়ের সহকারী শিক্ষক মুর্শিদা খাতুন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যখন তখন প্রতিবেশী রেখা বেগম আমাদেরকে গালিগালাজ ও উক্ত্যক্ত করে। আমরা ৬ জন মিলে তার আত্বীয় স্বজনদের জমি কিনে নিয়েছি এটাই আমাদের অপরাধ। আমরা এর সুষ্ঠ সুরাহা চাই।

সকল অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে রেখা বেগম বলেন, তাদের নামে একাধিক মামলা করেও কোন সুরাহা হয়নি। এমনকি তাদের উপর হয়রানি ও মিথ্যা মামলা দায়েরের বিষয়টি মিথ্যা।

শিবগঞ্জ থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ জানান, এনিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এছাড়াও খাইরুল ইসলাম গত ০৯ ফেব্রুয়ারী থানায় একটি জিডি করেছেন। এনিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।