চার মাস পর পদ্মা সেতুতে বসছে নতুন স্প্যান

পদ্মা সেতুতে ৩২তম স্প্যান ‘ওয়ান-ডি’ বসছে আজ শনিবার (১০ অক্টোবর)। এতে দৃশ্যমান হতে চলেছে সেতুর চার হাজার ৮০০ মিটার। এরই মধ্যেই স্প্যান বসানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। ৩১তম স্প্যান বসানোর চার মাস পর ৩২তম স্প্যানটি বসতে যাচ্ছে।

শনিবার সকালে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, পদ্মায় পানি কমেছে, তবে নদীতে এখন অনেক স্রোত। তারপরও স্প্যান বসানোর চূড়ান্ত প্রস্তুতি রয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেনের মাধ্যমে স্প্যানটি পিলারের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে। সেতুর ৪ ও ৫ নং পিলারে স্প্যানটি বসানো হবে।

চলতি বছরের ১০ জুন পদ্মা সেতুতে সর্বশেষ ৩১তম স্প্যান বসানো হয়েছিল। করোনা আর বন্যা পরিস্থিতির কারণে সেতুর অন্যান্য কাজ চললেও এরপর আর কোনো স্প্যান বসানো হয়নি। বন্যা পরিস্থিতি কেটে যাওয়ায় পদ্মায় পানির উচ্চতা কমতে শুরু করেছে। চীন থেকেও ফিরে এসেছে বিশেষজ্ঞ টিমের সদস্যরা। সেতুর ৩২তম স্প্যান বসানোর জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।

সেতু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ওয়ান-ডি ছাড়াও স্প্যান ‘ওয়ান-এ’, ‘ওয়ান-বি’, ‘ওয়ান-সি’ সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। পরবর্তী চারটি স্প্যান ১-২, ২-৩, ৩-৪ ও ৪-৫ নম্বর পিলারে বসানো হবে। আর ডিসেম্বরে ৩৩তমসহ বাকি ১০টি স্প্যান পিলারের ওপর বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩১টি স্প্যান। এতে সেতুর চার হাজার ৬৫০ মিটার অংশ দৃশ্যমান হয়েছে।

৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এরই মধ্যে সবকটি পিলার দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে।