চেম্বার-থানায় বসে নয়, মোবাইল কোর্ট হবে অনস্পট : হাইকোর্ট

ভ্রাম্যমাণ আদালতের (মোবাইল কোর্টের) কার্যক্রম পরিচালিত হবে অনলি স্পটে। যেখানে ঘটনা ঘটবে সেখানেই কোর্ট বসাতে হবে। কারও চেম্বারে বা থানায় বসে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের এ বিষয়ে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছেন হাইকোর্ট। প্রশিক্ষণের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন আদালত।

এছাড়া নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় দুই শিশুকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেয়ার ঘটনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা রাজিয়ার ব্যাখ্যা দাখিল করতে বলা হয়েছে। আগামী ২৬ আগস্টের মধ্যে হাইকোর্টে এ ব্যাখ্যা দাখিল করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এ সময় শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তার সঙ্গে ছিলেন ব্লাস্টের পক্ষে আদালতে যুক্ত হওয়া আইনজীবী রেজাউল করিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও বিপুল বাগমার।

নেত্রকোনায় দুই শিশুকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেয়ার ঘটনায় শুনানির এক পর্যায়ে বিচারপতি বলেন, ‘মিস্টার অ্যাটর্নি জেনারেল, আপনি আছেন, ভালোই হয়েছে। আমি যতটুকু নিউজে পড়ে জেনেছি ম্যাজিস্ট্রেট রাজিয়া সুলতানা, উনি চেম্বারে বসে অর্ডারটা পাস করেছেন। এটা কি এখানে তিনি পারেন?’

তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এটা হয়তো মাই লর্ড অন্য বিষয়। এতে তিনি প্রসিডিউর লঙ্ঘন করেছেন।’

এতে বিচারপতি বলেন, ‘শুধু প্রসিডিউর না, সবটাই আপনাকে দেখতে হবে। আপনি দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল। আইন কোথায়, কীভাবে লঙ্ঘন হয় সেটা আপনাকে দেখতে হবে। মোবাইল কোর্টটা হচ্ছে অনলি স্পট। যেখানে ঘটনা ঘটবে সেখানেই বিচার করতে হবে। এটা চেম্বারে বসে করার সুযোগ নেই। থানায় বসে করারও সুযোগ নেই।’

আদালত বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেটদের ফাউন্ডেশন ট্রেনিং হয়, সেখানে মোবাইল কোর্ট কীভাবে পরিচালনা হবে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হোক।’

নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় দুই শিশুকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেয়ার ঘটনায় বুধবার (৪ আগস্ট) বিচারপতিকে চিঠি লেখেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির। পরে আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে গতকালই শিশু দুটিকে মুক্তির নির্দেশ দেন।

গত রোববার (১ আগস্ট) রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনে দুই শিশুকে এক মাসের দণ্ডাদেশ দেন নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়া। তিনি তার নিজ কার্যালয়ে ওই দণ্ডাদেশ দেন।

শিশু দুটির বাড়ি আটপাড়া উপজেলার দুওজ ইউনিয়নে। তাদের মধ্যে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েটির বয়স ১৫ বছর (জেএসসির নিবন্ধন কার্ড অনুযায়ী)। ছেলেটিও সমবয়সী।