চোখ বুজে থাকারাও রোহিঙ্গা গণহত্যার দোসর : এরদোগান

মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে দেশটির রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’ চালানোর অভিযোগ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। ঈদুল আজহার নামাজ শেষে ইস্তাম্বুলে এক বক্তৃতায় তিনি এ অভিযোগ করেন। খবর: দ্য গার্ডিয়ানের। রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিশ্চুপ রাষ্ট্রগুলোর কড়া সমালোচনা করে এরদোগান বলেন, ‘গণতন্ত্রের লেবাস পরে ওরা (মিয়ানমার) রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে। আর এ বিষয়ে যারা চোখ বুজে বসে আছেন, তারাও মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার দোসর বা সহযোগী।’

এ সময় তিনি তুরস্কের পক্ষ থেকে জানান, সংঘাতের পর বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর খাবারের খরচ দিতে প্রস্তুত তার সরকার।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী প্রধানের অফিস থেকেই শুক্রবার স্বীকার করা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইনে সহিংসতায় নিহত ৪ শতাধিক ছাড়িয়ে গেছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থনি গুতেরেসও নিহতের এই সংখ্যা উল্লেখ করে শুক্রবার বলেছেন, নিহতদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা মুসলিম।

রাখাইনে ব্যাপক গণহত্যা ও কৌশলে রোহিঙ্গাদের গ্রাম পুড়িয়ে দিচ্ছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। এর ফলে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে রাখাইনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উত্তেজনা বাড়ছে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বৃদ্ধির ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তের শূন্য রেখায় ২০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা আটকা পড়েছে। রাখাইনের সহিংসতা থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষা করছেন তারা।
জাতিসংঘ বলছে, রাখাইন থেকে পালিয়ে নাফ নদ পাড়ি দিয়ে অন্তত ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। নাফ নদে রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবে প্রাণহানিও অর্ধশতাধিক ছাড়িয়েছে।
এ সময় চলতি মাসের শেষের দিকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে রোহিঙ্গা ইস্যু তুলে ধরবেন বলে জানান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান।
ইতোমধ্যে তিনি জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্থনি গুতেরাসসহ অন্যান্য মুসলিম নেতাদের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা করেছেন।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু বলছে, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু সীমান্ত খুলে দেয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। রোহিঙ্গাদের ভরণ-পোষণের খরচও তুরস্ক দেবে বলে মন্তব্য করেছেন কাভুসোগলু।
বাংলাদেশে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। ঢাকা বলছে, তাদের পক্ষে আরও রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া অসাধ্য হয়ে পড়বে।
উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা মুসলিম সংকটে বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশ ও মুসলিম সংগঠনকে তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে চলতি বছরে ওআইসির বৈঠকে তুরস্ক একটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করবে বলে জানান দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাভুসোগলু।
তিনি বলেন, ‘আমরা এই সমস্যার সুনির্দিষ্ট সমাধান খুঁজব।’