জাবিতে স্বামীকে আটকে রেখে নারীকে ধর্ষণ: ছাত্রলীগ নেতাসহ চারজন রিমান্ডে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হলের পাশে জঙ্গলে বহিরাগত এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় ছাত্রলীগ নেতাসহ চারজনকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

রোববার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগম এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

যাঁদের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন—জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান সাগর, ৪৬তম ব্যাচের সাগর সিদ্দিক ও ৪৫তম ব্যাচের হাসানুজ্জামান।

বিকেলে সাভার থানা-পুলিশ চারজনকে আদালতে হাজির করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান প্রত্যেককে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পিপি আনোয়ারুল কবীর বাবুল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শনিবার সকালে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে মধ্যরাতে ওই নারীকে ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হয়। রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেন।

রবিবার সকালে ছয়জনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন ওই নারীর স্বামী। পলাতক আছেন ভুক্তভোগীর পূর্বপরিচিত মো. মামুনুর রশিদ এবং স্বামীকে আটকে রাখায় সহায়তা ও মারধর করা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মুরাদ। ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা মোস্তাফিজকে সাময়িক বহিষ্কার এবং পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাঁকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে।

মামলার বর্ণনা অনুযায়ী, গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল-সংলগ্ন জঙ্গলে ওই নারীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। স্বামীকে হলের ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রাখা হয়। ওই দম্পতির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন মামুনুর রশিদ। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেকে আনা হয়। এরপর তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রাখা হয়। এরপর তাঁর স্ত্রীর মাধ্যমে নিজের রেখে আসা জিনিসপত্র আনতে বলেন মামুন। সেগুলো নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন ওই নারী। জিনিসপত্র নিয়ে মামুন মশাররফ হোসেন হলের কক্ষে রেখে আসেন। এরপর নারীকে বলেন, তাঁর স্বামী অন্যদিক থেকে আসবেন। পরে ওই নারীকে হল-সংলগ্ন জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়।