জীবন গেলেও এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলন চলবে

এমপিওভুক্তির দাবিতে পঞ্চম দিনেও আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। দাবি আদায়ে রোববার থেকে আমরণ অনশনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

গত পাঁচ দিন ধরে এমপিওভুক্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ব্যানারে। গত মঙ্গলবার থেকে খোলা আকাশের নিচে শীত আর মশার যন্ত্রণাকে উপেক্ষা করে শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

এমপিওভুক্তি, সহকারী শিক্ষকদের মতো বেতন, বাসা ভাড়া ও চিকিৎসা ব্যয় পাওয়াসহ বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্লাকার্ড, ফেস্টুনে ‘মা ভাত দাও’, মা ‘এমপিও চাই’, ‘করুণা নয় নিজেদের অধিকার চাই’ লেখা এমন নানা শ্লোগানে সহস্রাধিক শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওকরণের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। প্রতিদিনের মত শনিবার সকাল থেকেই তারা অবস্থান কর্মসূচী পালন করে যাচ্ছেন।

ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, টানা পাঁচ দিন আন্দোলন চালিয়ে গেলেও আমাদের দিকে কেউ মুখ তুলে দেখছেন ন। শিক্ষক-কর্মচারীরা নিজেদের অধিকার আদায়ে টানা পাঁচ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। সবাই অর্ধাহার-অনাহারে দিন পার করছেন। এতে অনেকে অসুস্থ হয়েও পড়ছেন।

তিনি আরও বলেন, গত পাঁচ দিন ধরে আমাদের খোলা আকাশে নিচে শীতের মধ্যে অনেক কষ্টে রাত পার করতে হচ্ছে। এতে অনেকেই দুর্বল হয়ে যাচ্ছেন। মানুষ গড়ার হাতিয়ারদের এমন নাজুক অবস্থার পরও সরকার আমাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাই জীবন গেলে যাবে তবুও এ আন্দোলন চালিয়ে যাবো। কাল থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা আমরণ অনশনে নামবেন বলেও জানান তিনি।

ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ বিনয় রায় বলেন, ‘দেশের ৯৮ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেসরকারি ব্যবস্থাপনা নির্ভর। এর মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও কারিগরি মাদরাসা রয়েছে। বিভিন্ন স্তরে পাঁচ-ছয় হাজারের বেশি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় আছে, যা এই স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক-চতুর্থাংশ।

তিনি আরও বলেন, ‘এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৮০ হাজারেরও বেশি শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে। প্রায় ১৫ বছর ধরে তারা মানবেতর জীবনযাপন করেও পাঠদান করছেন। আমাদের ক্যাটাগরি পূরণ হলেও এমপিও প্রদানে শুধু আশ্বাস ছাড়া আর কিছু দেয়া হচ্ছে না।

বিনয় রায় বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা অবস্থান কর্মসূচী চালিয়ে যাব। আমাদের দাবি আদায়ে সারাদেশ থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। শিক্ষক হলেও আজ আমরা রাস্তার ভিখারি হয়ে গেছি। কেউ আমাদের দিকে তাকাচ্ছেন না। দাবি আদায় ছাড়া রাজপথ ছাড়বেন বলেও জানান তিনি।