টাঙ্গাইলের পাহাড়ে বেড়েছে আনারসের আবাদ! দাম ভালো পাওয়ায় খুশি চাষিরা

টাঙ্গাইলের মধুপুরকে আনারসের রাজধানী বলা হয়। মধুপুরের পাশাপাশি ঘাটাইল ও সখিপুর উপজেলায় পাহাড়িয়া এলাকায় প্রচুর আনারসের আবাদ হয়। গত কয়েক বছর ধরে চাষিরা আনারসের ভালো দাম পাচ্ছেন। টানা তাপদাহে গরমের কারণে এ বছর আনারসের দাম আরো বেড়েছে। দাম ভালো পাওয়ায় পাহাড়ে আনারসের আবাদও বেড়েছে বলে জানান চাষিরা।

আনারস চাষিরা জানান, মধুপুর গড় তথা মধুপুর, ঘাটাইল ও সখিপুর এলাকার পাহাড়িয়া এলাকায় জলডুগী বা হানি কুইন ও ক্যালেন্ডার জাতের আনারসই বেশি আবাদ হয়। সাধারণত আনারসের চারা রোপনের দুই বছর পর পরিপক্ক হয় এবং ফল আসে। বর্তমানে চাষিরা নানারকমের রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগের কারণে চারা রোপনের এক বছরের মধ্যেই ফল আসে। তবে ওই সব আনারসে প্রকৃত স্বাদ থাকে না।

ঘাটাইল উপজেলার পাহাড়িয়া এলাকা সিংহচালা, দুলালিয়া, সিদ্দিখালী, মুরাইদ, রসুলপুর, বেইলা, লক্ষিন্দর, ফটিয়ামারি, কাজলা, ছোনখোলা, মোমিনপুর, শোলাকুড়ি, সাগরদিঘী, আষাঢ়িয়াচালা, রামদেবপুর, জোড়দীঘি, শহরগোপিনপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আনারস চাষ হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর ঘাটাইল উপজেলায় প্রায় ৮শ ৫০ হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৫০ হেক্টর বেশি। এদিকে, মধুপুর উপজেলায় গত বছরের চেয়ে এবার ৭শ হেক্টর বেশি জমিতে আনারস চাষ হয়েছে।
ঘাটাইল ও মধুপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী গাড়োবাজার এবং মধুপুরের জলছত্র আনারস ক্রয়-বিক্রয়ের বড় হাট। প্রতি সপ্তাহের রবিবার ও বুধবার গাড়োবাজারে আনারসের হাট বসে। এছাড়া আনারসের ভরা মৌসুমে এ হাটে প্রতিদিনই আনারসের বাজার বসে।

আনারস চাষি ওমর ফারুক বলেন, এক বিঘা জমিতে তিন হাজার আনারসের চারা লাগিয়েছিলাম। প্রতিটির পেছনে ১৫ টাকা করে খরচ হলেও প্রতিটি বিক্রি করছি ৪৬ থেকে ৫০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি। আমাদের কৃষি অফিস থেকে তেমন সহযোগিতা করে না। আমরা জঙ্গলে থাকি তো তাই কেউ খোঁজ রাখে না।

অপরজন খোকন মিয়া বলেন, আগে অতি বৃষ্টি, ভাইরাস ও মাটি দূষিত হওয়ার কারণে আনারস পচে নষ্ট হলেও এবার তেমনটি হয়নি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে।

ময়মনসিংহের শিমতলী এলাকার পাইকারী ক্রেতা আতিকুর রহমান ও রফিকুল ইসলাম বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড গরম। এতে আনারসের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। তাই দামও অনেক বেশি। এক মাস আগেও যে আনারস ২৫/৩০ টাকা দিয়ে কিনতাম। বর্তমানে সেই আনারস ৪৫/৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। চাহিদা বাড়লে দাম বাড়ে। চাহিদা কমলে দাম কমে।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল জানান, প্রচন্ড গরমের কারণে ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে আনারসের।