ডেঙ্গু জ্বর: ঈদে সারাদেশে স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা কতটা?

বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ মূলত ঢাকায় হলেও ঢাকার বাইরে বেশ কয়েকদিন ধরে প্রতিদিন গড়পড়তা পাঁচশো জন এই মশাবাহিত ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বরং আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে – বিভিন্ন জেলায় সরকারি হিসেবে ১৭১২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, আর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দেড় হাজার মানুষ।

ওদিকে, বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে আসন্ন ঈদুল আজহার সময় বিপুল সংখ্যক মানুষ ঢাকা ছেড়ে গ্রামে চলে গেলে এই ভাইরাস সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

পরিস্থিতি তেমন হলে কী ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে? – এমন এক প্রশ্নের জবাবে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মেহেরজাদী সাব্রিনা ফ্লোরা বলছেন, ঢাকা থেকে যারা যাবেন তাদের মধ্যে একটা অংশ কোনো না কোনো ভাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন।

তিনি বলেন, কিন্তু এদের মধ্যে কারও হয়তো জ্বর থাকবে, আবার কারও হয়তো তখনো জ্বর নেই কিন্তু পরে জ্বর হতে পারে।

“তাই এটা প্রতিরোধে, কারও যদি জ্বর থাকে তাহলে তিনি যেন ভ্রমণ না করেন। জ্বর থাকলে যেন পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন যে এটা ডেঙ্গু কি-না”।

মেহেরজাদী সাব্রিনা ফ্লোরা বলেন, আবার কারও কারও হয়তো জ্বর তখন হয়নি কিন্তু তার মধ্যে ইনফেকশন ঢুকে আছে। কিন্তু জ্বর না হওয়ায় তিনি টের পাননি। তিনি হয়তো চলে যাবেন। এভাবে ভাইরাস দেশের অন্য অঞ্চলে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

“আবার এডিস মশা এখনো শহরকেন্দ্রীক। সাধারণত এ মশা একশো’ থেকে চারশো’ মিটারের বেশি উড়তে পারে না। কিন্তু পরিবহনের মাধ্যমে এটা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে পারে”।

কিন্তু এই যে বিপুল সংখ্যক মানুষ ঈদে ঢাকা ছাড়েন, তাদের কি নজরদারীতে নেয়া সম্ভব?

জবাবে মেহেরজাদী সাব্রিনা ফ্লোরা বলেন, এটা কঠিন কিন্তু সরকার চেষ্টা করছে। দেশজুড়ে সচেতনতা কর্মসূচি চলছে।

“ডেঙ্গু ওখানে গিয়ে ধরা পড়লে সেখানে কি করতে হবে, সেজন্য একটা গাইডলাইন দেশের সর্বত্র পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসকদের পুনঃপ্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে”।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু বড় আকারের একটা প্রাদুর্ভাব, যা বাংলাদেশ সহ কয়েকটি দেশে হচ্ছে।

“তবে আমাদের চিকিৎসকরা এখন যথেষ্ট অভিজ্ঞ। কোথাও কারও এ ধরণের জ্বর হলে চিকিৎসা দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি”।