থামছে না মৃত্যুর মিছিল : ছয় মাসে সড়কে নিহত ২২৯৭

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ১,৯৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২,২৯৭ জন নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় ৫,৪৮০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২৯২ নারী ও ৩১৫ শিশু রয়েছে।

১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সারা দেশে বিভিন্ন মহাসড়ক, জাতীয় সড়ক, আন্তঃজেলা সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে এসব প্রাণঘাতি দুর্ঘটনা ঘটে।

শনিবার বেসরকারি সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির নিয়মিত জরিপ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মাসে ২৬৫টি দুর্ঘটনায় ৩৪ নারী ও ৪২ শিশুসহ ৩৩৩ জন নিহত ও ৬৩২ জন আহত হন। এর মধ্যে ২৩ জুন ঈদুল ফিতরের ছুটির প্রথমদিন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত আটদিনে ৭৩টি দুর্ঘটনায় ১১ নারী ও ১৫ শিশুসহ ১২০ জনের প্রাণহানি ঘটে। এসব ঘটনায় আহত হন ২২৬ জন।

তবে ঈদ-যাতায়াত ব্যবস্থাপনা ও প্রাকৃতিক আবহাওয়া তুলনামূলক ভালো থাকায় এ বছর ঈদের ছুটিতে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কম ঘটেছে বলে জাতীয় কমিটির পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়েছে। গত বছর ঈদুল ফিতরের ছুটিতে আটদিনে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩৩ জনের প্রাণহানি ঘটে।

তবে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ১,৮২৬টি দুর্ঘটনায় ২৬২ নারী ও ২৬১ শিশুসহ ১,৯৪১ জন নিহত এবং ৪,৭৯৪ জন আহত হন। আর এ বছর প্রথম ছয় মাসে ১,৯৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯২ নারী ও ৩১৫ শিশুসহ ২,২৯৭ জন নিহত ও ৫,৪৮০ জন আহত হন। এই হিসেবে দুর্ঘটনা ও নিহতের হার যথাক্রমে ৮.৬ শতাংশ ও ১৮.৩৫ শতাংশ এবং আহত ১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ বেড়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩৫০টি দুর্ঘটনায় ৫৪ নারী ও ৫৫ শিশুসহ ৪১৬ জন নিহত ও ১,০১২ জন আহত হয়েছেন।

ফেব্রুয়ারিতে ৩৭২টি দুর্ঘটনায় ৫৬ নারী ও ৫৮ শিশুসহ নিহত হয়েছেন ৪২৭ জন; আর আহত হয়েছেন ১,০৯৪ জন। মার্চে ৩৩০টি দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এতে ৪৯ নারী ও ৫৪ শিশুসহ কমপক্ষে ৩৬২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আর আহত হয়েছেন ৮৬৫ জন। এপ্রিলে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩২০টি। এতে ৪৭ নারী ও ৪৮ শিশুসহ ৩৪৯ জন নিহত ও ৮৬১ জন আহত হয়েছেন। মে মাসে ৩৪৬টি দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত হয়েছেন যথাক্রমে ৪১০ জন ও ১,০১৬ জন। নিহতদের মধ্যে ৫২ নারী ও ৫৮ শিশু রয়েছে।

জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে বলেন, এবার ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাতায়াতে সরকারি পদক্ষেপ বিগত বছরগুলোর তুলনায় ভালো ছিলো। যে কারণে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কম ঘটেছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে আইন ভঙ্গ করে পণ্যবাহী ট্রাকে ও বাসের ছাদে যাত্রী বহনসহ চালকদের অসতর্কতার কারণে কিছু মানুষের করুণ মৃত্যু হয়েছে। রংপুরের পীরগঞ্জে ট্রাক উল্টে একসঙ্গে ১৭ জনের করুণ মৃত্যুর জন্য চালকের খামখেয়ালিপনাকে দায়ী করেন তিনি।