দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই ৩৫০ কিলোমিটার!

ঢাকায় যারা লোকাল বাসে চলাফেরা করেন তাঁরা দাঁড়িয়ে যাতায়াতের বিষয়টি সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত। মিরপুর থেকে বাসে শ্যামলী কিংবা ফার্মগেট যেতেই অনেকের ‘খবর’ হয়ে যায়।

মাত্র ৬-৭ কিলোমিটার দাঁড়িয়ে যেতে এই অবস্থা মেনে নিতে অনেক যাত্রীর কষ্ট হয়ে যায়।

কিন্তু পথটা যদি ৩৫০ কিলোমিটারের হয়? অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটাই সত্যি। শুক্রবার রাত থেকে ঢাকা হতে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ঠিক এই পরিমাণ কিংবা তারচেয়ে বেশি পথ শুধু ট্রেনের করিডোরে দাঁড়িয়ে পাড়ি দিয়েছেন হাজারো মানুষ।

ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গে যাতায়াতে সড়কপথের সমস্ত বাসের শুক্রবারের শিডিউলে বিপর্যয় ঘটে। ফলে কর্তৃপক্ষ অধিকাংশ বাস যাত্রীদের টিকেট ফিরিয়ে দেয় বলে জানা গেছে। এসব যাত্রীরা বাধ্য হয়ে ট্রেনেই সওয়ার হন। এ ছাড়া শুক্রবার দুইবেলা ঢাকায় অগ্রণী ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা ছিল। এতে উত্তরবঙ্গ থেকে হাজারো প্রার্থী অংশ নেয়। বাসের টিকেট ফেরত দেওয়ায় ট্রেন ছাড়া এসব যাত্রীর উপায় ছিল।

দাঁড়িয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের স্ট্যান্ডিং যাত্রী সোয়েব বলেন, এতটা পথ দাঁড়িয়ে যাওয়ার অভ্যাস নেই। প্রথমবারের মতো সারারাত জেগে দাঁড়িয়ে এলাম। এটা ভয়ংকর অভিজ্ঞতা।

ব্যক্তিগত কাজে শিশু সন্তান নিয়ে ঢাকায় আসা ব্যাংক কর্মকর্তা হাসানুল বান্না বলেন, ‘আমি দাঁড়িয়ে এসেছি হয়তো আমার সহ্য হয়েছে। কিন্তু আমার ৭ বছরের বাচ্চাটাকেও দাঁড়িয়ে আসতে হয়েছে। ‘

দাঁড়িয়ে এলেন কেন? এই প্রশ্নের জবাবে বান্না বলেন, ‘বাসের টিকেটের টাকা ফেরত দেওয়ায় বাধ্য হয়ে ট্রেনের স্ট্যান্ডিং টিকেট কিনেছি। যেতে তো হবে। ‘

বিজয় দিবসের ছুটির কারণে আগের দিন (বৃহস্পতিবার) উত্তরবঙ্গগামী ট্রেন-বাসে প্রচণ্ড চাপ পড়ে। যার ফলে ভেঙে যায় রংপুর এক্সপ্রেসের শিডিউল। ১২ ঘণ্টা দেরিতে শুক্রবার রাতে কমলাপুর থেকে ছেড়ে যায় ট্রেনটি।

এদিকে দিনাজপুরগামী ৭৫৮ দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনে তিল ধারণের ঠাই ছিল না। শরীরের সাথে শরীর লাগিয়ে নির্ঘুম অবস্থায় দাঁড়িয়ে ৩৫০ থেকে তারচেয়ে বেশি পথ পাড়ি দিতে হয় হাজারো মানুষকে।