নওগাঁয় ৫৪ শিক্ষার্থীকে পেটালেন প্রধান শিক্ষক

নওগাঁর মান্দায় গাছের কাটা অংশ ডাল দিয়ে দশম শ্রেণীর ৫৪ শিক্ষার্থীকে বেদম মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে। ক্লাসে পড়া দিতে না পারার অভিযোগ এনে অমানষিক নির্যাতন করা হয় কোমলমতি এসব শিক্ষার্থীদের।

গত (২২ মে) সোমবার দুপুরে উপজেলার চকগোপাল উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। মোবাইলফোনে অভিযোগ পেয়ে এদিন বিকেলে তাৎক্ষনিক তদন্তে যান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেখ শাহ্ আলম ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা পবিত্র কুমার। নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে অভিভাবকমহলেও।

নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী ইকবাল হোসেন, জাবেদ আলী, জানায়, ‘টিফিনের আগে গণিতের ক্লাস নিতে যান প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী। পড়া দিতে না পারায় অভিযোগ এনে ক্লাসের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ডাল দিয়ে বেদম মারধর করে। এতে আমার পিঠের কয়েকটি স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়ে রক্ত ঝরে। ছুটির পর বাড়ি এসে অভিভাবকদের জানালে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন তারা।’

শিক্ষার্থী ইকবালের নানী শাহিদা বেগম জানান, ‘আমার নাতিকে অমানষিকভাবে নির্যাতন করেছে ইদ্রিস মাষ্টার। একজন সুস্থ মানুষ বাচ্চাদের এভাবে পেটাতে পারে না। আমি ইদ্রিস মাষ্টারের শাস্তির দাবি করছি।’

শিক্ষার্থী অভিভাবক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ক্লাস পড়া না পারায় দুই মাস আগে আমার ছেলে ফজলে রাব্বীকেও একইভাবে পেটান ইদ্রিস মাষ্টার। আমি ইউএনওর কাছে অভিযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নিলে তিনি বাড়ি এসে হাতে-পায়ে ধরে ক্ষমা চান। এজন্য আর অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ইদ্রিস মাষ্টার বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের প্রায়ই নির্যাতন করেন। তার শাস্তি হওয়া দরকার।’

অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া পারে না। ক্লাসে শুধু হইচই করে। তাই তাদের মারধর করা হয়েছে। এটি সঠিক হয়নি বলেও স্বীকার করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেখ শাহ্ আলম বলেন, তাৎক্ষনিক তদন্তে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মারধরের সত্যতা পাওয়া গেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গণহারে শিক্ষার্থীদের মারধর করে প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী চরম অপরাধ করেছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।