নকলের অভিনব কৌশল শিক্ষার্থীর, অস্ত্রোপচার করে কানে ব্লুটুথ ডিভাইস!

পরীক্ষায় পাস করার জন্য নকল করা বা নানা অসৎ উপায় অবলম্বন করার ঘটনা প্রায়শই সামনে আসে, কিন্তু নকল করতে গিয়ে নিজের শরীরে অস্ত্রোপচার করানোর ঘটনা বিরল। তবে পরীক্ষায় নকল করতে এমনই অভিনব কৌশলের আশ্রয় নিলেন ভারতের এক মেডিকেল শিক্ষার্থী।
কানে অস্ত্রোপচার করে মাইক্রো ব্লুটুথ ডিভাইস বসিয়ে এমবিবিএস চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেন ওই শিক্ষার্থী।

ঘটনা ভারতের মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের একটি মেডিকেল কলেজের।

ইন্দোরের এমজিএম মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস ছাত্রদের পরীক্ষা চলছিল। যথানিয়মে পরীক্ষা শুরু হয় কিন্তু হঠাৎ করেই পরীক্ষার ৬৫ মিনিট পর সেখানে হাজির হন একটি পরীক্ষক দল। এই দলটি ছিল জবলপুর মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের। তারা এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন পান। এরপর একের পর এক জিজ্ঞাসাবাদ করতে বেরিয়ে আসে অবাক করা সব তথ্য। মোবাইল নিয়ে কঠোরভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে , জানা যায় ওই শিক্ষার্থী একা নয় আর কয়েকজন রয়েছেন যারা পরীক্ষায় নকল করছেন।

মহাত্মা গান্ধী মেডিকেল কলেজের একজন কর্মকর্তা জানান, ওই শিক্ষার্থী ১১ বছর ধরে মেডিকেল কলেজে পড়ছেন। কিন্তু বারবার ফাইনাল অকৃতকার্য হয় সে। আর এবারই ছিল তার শেষ সুযোগ।

মেডিকেল কলেজের ডিন ডা. সঞ্জয় দীক্ষিত বলেন, ওই শিক্ষার্থী অন্যান্য ৭৮ জনের সঙ্গে জেনারেল মেডিসিন পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তখন দেবী অহিল্যা বাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার রচনা ঠাকুরের নেতৃত্বে একটি দল সেখানে পৌঁছায়। দলের একজন সদস্য, ওই শিক্ষার্থীর ট্রাউজারের ভেতরের পকেটে একটি মোবাইল ফোন খুঁজে পান। ফোনটি চালু ছিল এবং একটি ব্লুটুথ ডিভাইসের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। তবে শিক্ষার্থীর কাছে তখন ব্লুটুথ ডিভাইস খুঁজে পাননি তারা। এরপর টানা জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন যে, একজন ইএনটি সার্জন তার কানে ত্বকের রঙের সামঞ্জস্য করে একটি মাইক্রো ব্লুটুথ ডিভাইস লাগিয়েছিলেন।

ওই শিক্ষার্থী জানান, যাতে ব্লুটুথ কেউ দেখতে না পান তাই অস্ত্রোপচার করে কানে ব্লুটুথ লাগিয়েছেন। ওই শিক্ষার্থী জানান, তার আরেক সহপাঠী একটি মাইক্রো ডিভাইসও বসিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই কলেজ প্রশাসনের গাফিলতি সামনে চলে আসে। ওই কক্ষ থেকে প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থীকে পর্যবেক্ষণ করা হয় পাশাপাশি সেখানে উপস্থিত ছিলেন একজন শিক্ষিকা। আসলে নিয়ম অনুযায়ী , পরীক্ষা কক্ষে একজন শিক্ষক এবং একজন শিক্ষিকার থাকা জরুরি। ওই দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, দুইজনই অহিল্যা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। এই বিষয়ে যে চিকিৎসক এমন ধরনের অস্ত্রোপচার করেয়েছেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।