নরসিংদীতে সরিষার বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসির ঝলক

নরসিংদী জেলার ৬টি উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। মৌ মৌ সুগন্ধে এবং ন্যয্যমূল্য পাওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।

নরসিংদী জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ৬টি উপজেলায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল ৪ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমি। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এখানে সরিষার চাষ করা হয়েছে ৩ হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৪ হাজার ৭৮৭ মেট্রিক টন। এর মধ্যে নরসিংদী সদর উপজেলায় ৫৮০ হেক্টর, পলাশে ৪৯০ হেক্টর, বেলাবতে ৩৬৫ হেক্টর, মনোহরদী ৫৭৫ হেক্টর এবং রায়পুরাতে ৬৮৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়।

সূত্রটি আরও জানায়, সরিষা সাধারণত দুই প্রকার হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে বিআরআই-৯, অন্যটি হচ্ছে টুরী-৭। গত বছরের চেয়ে এবছর দি’গুণ জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না থাকায় সরিষা গাছগুলো দ্রত বেড়ে উঠেছে। নরসিংদী সদর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের কৃষক আবদুল মোতালিব বলেন, গত কয়েক বছর ধরে আমি সামান্য জমিতে সরিষা চাষ করি। এ বছর বাজারে সরিষার ভালো দাম থাকার কারণে আমি ২ একর জমিতে সরিষা চাষ করি এবং ফলনও হয়েছে খুব ভালো। এবার লাভবান হবো।

গত বছর আমি এক মণ সরিষা ১ হাজার ৯শ’ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এ বছর দুই মণ সরিষা বাজারে নিয়ে গিয়ে প্রতি মণ ৩ হাজার ২শ’ টাকা করে বিক্রি করেছি। বাজারে সরিষার প্রচুর চাহিদাও রয়েছে। এখন আর সরিষা বিক্রি করবো না। আশাকরি কিছুদিনের মধ্যে প্রতিমণ সরিষা ৪ হাজার টাকা দরে বিক্রি করতে পারবো।

রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ গ্রামের কৃষক জাব্বার মিয়া জানান, আমি প্রতি বছর সরিষার চাষ করি। এতে করে এক দিকে আমার জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায় এবং অন্যদিকে আমার জমি থেকে উৎপাদিত সরিষা দিয়ে পরিবারের তেলের চাহিদা পূরণ করে আসছি।

সরেজমিন বিভিন্ন হাটবাজার গিয়ে দেখা গেছে, বর্তমান প্রতি মণ সরিষা ২ হাজার ৮শ’ টাকা থেকে ৩ হাজার ৫শ’ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

নরসিংদী কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইদুর রহমান জানান, কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়াতে মাঠ পর্যায়ে নানা ধরনের সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে।

এছাড়া এ বছর সরিষার সঠিক দাম পেয়ে চাষিরা অনেক খুশি। চলতি মৌসুমে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি সরিষা পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করছেন।