নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ‘শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট’ শীর্ষক ওয়েবিনার

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে “বর্তমান শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট: অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির জন্য শিক্ষা” শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বেসরকারী পর্যায়ে উচ্চ শিক্ষার পথপ্রদর্শক,দেশের প্রথম বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে র্যাং কিং এ প্রথম স্থান অর্জনকারী নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে আজ “বর্তমান শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট: অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির জন্য শিক্ষা” শীর্ষক একটি ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।

ওয়েবিনারটি আয়োজন করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইন্সিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (এসআইপিজি)।

বিশিষ্ট বক্তাদের মধ্যে ছিলেন শ্রীলঙ্কার সর্বোদয় ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্সের চেয়ারম্যান শ্রী চন্না ডি সিলভা, শ্রীলঙ্কার সিলন টুডে’র, ডেপুটি এডিটর সুলোচনা আর মোহন, ইউএনডিপি বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ এবং এসআইপিজি’র প্রফেসরিয়াল ফেলো ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত শহীদুল হক।

মি. চন্না ডি সিলভা শ্রীলঙ্কার বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের মূল কারণগুলো তুলে ধরেন, যেমন; অনুৎপাদনশীল উন্নয়ন প্রকল্পে বিপুল বিনিয়োগ, সুশাসনের অভাব, দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় তহবিলের অব্যবস্থাপনা, রেমিটেন্স হ্রাস। এছাড়াও ২০১৯ সালে বিশাল কর হ্রাস যার ফলে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে, সন্ত্রাসী হামলা এবং মহামারীর কারণে পর্যটকদের আয় ৯০% কমেছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে সাহায্য চাওয়ার পরিবর্তে অর্থ মুদ্রণের কারণে মুদ্রার অবমূল্যায়ন ও মুদ্রাস্ফীতি এবং ৩ বিলিয়ন চীনা বিনিয়োগ হারানো।

সুলোচনা আর মোহন শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটের রাজনৈতিক অর্থনীতি এবং শাসনের দিকগুলির উপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন যে রাসায়নিক সার নিষিদ্ধ করার মতো জনতোষি নীতির ফলে খাদ্য উত্পাদন হ্রাস পেয়েছে এবং অধিক হারে কর হ্রাস রাজস্ব সংগ্রহকে ব্যাহত করেছে। আর তেমন কোন লাভ ছাড়াই বড় বড় প্রকল্পগুলো বৈদেশিক ঋণ বাড়িয়েছে।

ড. নাজনীন আহমেদ এই সংকট থেকে দক্ষিণ এশিয়া ও বাংলাদেশের জন্য শিক্ষণীয় বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন। তিনি উন্নয়ন প্রকল্পের চাহিদা এবং সেইসাথে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়কাল সঠিকভাবে অনুমান করা এবং বৃহৎ প্রকল্পগুলি হাতে নেওয়ার আগে বিস্তৃত আলোচনার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির সাথে সাথে ভবিষ্যতে ঋণের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনাও গুরুত্তের সাথে বিবেচনা করতে হবে।

রাষ্ট্রদূত শহীদুল হক শ্রীলঙ্কা সংকট থেকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের জন্য বৈদেশিক নীতি বিষয়ক শিক্ষণীয় দিকগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন যে শ্রীলঙ্কা বরাবরই এই অঞ্চলে ‘ভূরাজনীতির কেন্দ্র’ হিসেবে ছিল। তিনি আরও বলেন যে মহামারীর মতো কঠিন সময়ে বৈদেশিক নীতি নিয়ে সরকারের খুব বেশি পরীক্ষা করা উচিত নয়, যা শ্রীলঙ্কার বর্তমান দুরাবস্থাকে ত্বরান্বিত করেছে।

ওয়েবিনারের সঞ্চালক ছিলেন ড. গৌর গোবিন্দ গোস্বামী, অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, এনএসইউ। ওয়েবিনারে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে শিক্ষাবিদ, গবেষক, কূটনীতিক, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীরা যোগদান করেন।