নির্বাচনই না হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে : ড. কামাল

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, আসন্ন নির্বাচন যাতে না হয় সে ব্যাপারে যথেষ্ট আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ ক্ষমতাসীনরা জনমত বুঝে গেছে। যে কারণে জোর করে ক্ষমতায় থাকার সব ধরনের চেষ্টাই তারা করছে। নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হয় ক্ষমতাসীনরা সে চেষ্টাই করছে বলে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই নির্বাচনই হবে কি হবে না তা নিয়ে আশঙ্কা আছে।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর পুরানা পল্টনের জামান টাওয়ারে ঐক্যফ্রন্টের অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ড. কামাল বলেন, আমাদের স্বাধীন দেশের একটি সংবিধান রয়েছে। সেখানে কিভাবে নির্বাচন হবে সে বিধান রয়েছে। দেশের মালিক জনগণ। জনগণই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করে থাকে। সেজন্য নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য খুব চেষ্টা করে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে মিডিয়ারও বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। ভোটাররা যেন স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সেজন্য বাধা সৃষ্টিকারীদের শনাক্তের জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, খু্বই দুঃখজনক যে, ভোটারদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। মিছিল মিটিংকারীদের আক্রমণ করা হচ্ছে, প্রার্থীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। গুলি করা হচ্ছে। আরও দুঃখজনক যে, এসব ঘটনায় কোনো তদন্ত হয় না, কোনো আইনানুগ ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে না। এসব তো খেয়াল খুশির ব্যাপার না।

তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন নিশ্চিত করার কথা সংবিধানে বলা হয়েছে। যারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনিশ্চিত করার চেষ্টা করছে, বাধা সৃষ্টি করে, আক্রমণ করে এদের ব্যাপারে সংবিধান অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা থাকলেও তা নেয়া হচ্ছে না। সে কর্তব্য পালনে আমরা ঘাটতি দেখছি।

ড. কামাল বলেন, ‘শুধু বিরোধী দলের প্রার্থীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, এটা অবাক কাণ্ড। তাদেরই আক্রমণ করে বন্দিও করা হচ্ছে! অথচ যারা আক্রমণকারী তারা আক্রমণ করেই যাচ্ছে। এগুলো উদ্বেগের। স্বাভাবিকভাবেই আশঙ্কা হচ্ছে, আসলে ভোটের দিন কী হবে।’

নেতাকর্মী ও মিডিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণের হয়ে পাহারা দিতে হবে। ভোটের দিন যেন সেরকম কিছু না ঘটে। যাতে ভোটাররা বঞ্চিত হয়, অন্যের ভোট দেয়া ও জাল ভোট দেয়ার ঘটনা ঘটে।’

প্রার্থী, সমর্থকদের উপর আক্রমণ ও গ্রেফতারের অভিযোগ আপনাদের। এমতাবস্থায় নির্বাচন হবে কি-না বা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে কিনা? আশঙ্কা কী? জানতে চাইলে ড. কামাল বলেন, ‘আমরা তো তথ্য দিচ্ছি। আশঙ্কা তো আছেই। নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ হতে দেয়া হবে না। এটা তো আপনারা দেখতেছেন আমরা দেখতেছি। জনমত কাদের পক্ষে তারা তো তারা বুঝে গেছে। সরকার না-কি আমাদের পক্ষে। রাষ্ট্রপতির ডাক আমরা এখনো পাইনি। আশা করছি অনুমতি পাবো। অনুমতি পেলে আপনাদের জানানো হবে।’

নির্বাচনের আর ১৪ দিন। আপনারা সেভাবে মাঠে নামতেই পারেননি বলছেন। এমতাবস্থায় বাকি সময়টুকুতে আপনারা টিকে থাকতে পারবেন বলে মনে করেন?

সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘অবশ্যই টিকে থাকতে পারবো। জনমত থাকলে মাঠে টিকে না থাকার কোনো প্রশ্নই নেই।’