নুসরাত হত্যায় জড়িত ১৬ জনকে শনাক্ত করেছে পিবিআই

ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যার সাথে জড়িত ১৬ জনকে সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রোববার পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান। একইসঙ্গে তিনি জানান মে মাসেই চার্জশিট দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ঘটনার পরিকল্পনা, হত্যা মিশন বাস্তবায়ন, খুনের মিশনে অর্থ ব্যয়সহ নানাভাবে এখন পর্যন্ত ১৬ জনের সংশ্নিষ্টতা পাওয়া গেছে। শিগগিরই দেশব্যাপী চাঞ্চল্য তৈরি করে মে মাসে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করা হবে।

নুসরাত হত্যার ঘটনায় এই মামলায় আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত সাতজন আসামি রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৭ মার্চ সকাল ১০টার দিকে অধ্যক্ষ তার অফিসের পিয়ন নূরুল আমিনের মাধ্যমে ছাত্রীকে ডেকে নেন। পরীক্ষার আধাঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন অধ্যক্ষ। পরে পরিবারের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হন অধ্যক্ষ।

গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। সেখানে মাদ্রাসার এক ছাত্রী তাকে জানান, তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কে বা কারা মারধর করেছে। এ কথা শুনে রাফি ওই ভবনের চারতলায় ছুটে যান। সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচজন ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। তিনি অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় না ফেরার দেশে চলে যান ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি। চিকিৎসকদের প্রাণপণ চেষ্টার পরও তাকে বাঁচানো যায়নি। টানা ১০৮ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে হার মানেন এ ছাত্রী। পরদিন বৃহস্পতিবার স্থানীয় ছাবের সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে সন্ধ্যায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় নুসরাতের মরদেহ।