পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই দেখা মিলছে কাঞ্চনজঙ্ঘার

সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই দেখা মিলছে কাঞ্চনজঙ্ঘার। শরৎ ঋতুর আকাশেই যেন উঁকি দিচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য্য মেলে ধরে কাঞ্চনজঙ্ঘার যেন দুই হাত বাড়িয়ে ডাকছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। এবার নির্দিষ্ট সমযে দেখা যাচ্ছে হিমালয়ের দ্বিতীয় উচু এবং পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম এই পর্বতশৃঙ্গ। কয়েকদিন থেকে দেখা যাচ্ছে এই পর্বতচূড়া।

যাদের পাসপোর্ট-ভিসা করে পাশের দেশে গিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখার সুযোগ মেলে না তাদের জন্য আদর্শ জায়গা পঞ্চগড়ের এই তেঁতুলিয়া উপজেলা। তেঁতুলিয়াসহ বিভিন্ন স্থান থেকে খালি চোখেই অবলোকন করা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। সবুজের মাঝে নীল আকাশের বুকে ভেসে ওঠা এই পর্বতশৃঙ্গ পঞ্চগড়ে ঘুরতে আসা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। শুধু মেঘ ও কুয়াশামুক্ত গাঢ় নীল আকাশ থাকলেই দেখা যায় হিমালয়ের এই পর্বতশৃঙ্গ। তবে আকাশে মেঘ বা কুয়াশা থাকলে অনেক সময় নিরাশ হয়ে ফিরতে হয় দর্শনার্থীদের।

জানা যায়, মনোমুগ্ধকর পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সামর্থ্যবানরা ছোটে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলা শহরের টাইগার হিলে। দার্জিলিংয়ের টাইগার হিলই কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া দেখার সবচেয়ে আদর্শ স্থান। আবার কেউ কেউ যায় সান্দাকপু বা ফালুট। আবার কেউ কেউ সরাসরি নেপালে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করে এই চূড়া। কিন্তু ঘরোয়া পরিবেশে নিজের মতো করে দেখার সুযোগ শুধু পঞ্চগড় থেকেই মিলছে। পঞ্চগড়ের প্রায় সব এলাকার ফাঁকা জায়গা থেকেই দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। তবে সবচেয়ে ভালো দেখা যায় তেঁতুলিয়ার উপজেলা পরিষদ ডাকবাংলোর পাশ দিয়ে বয়ে চলা মহানন্দা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এই সময়ে মেঘ ও কুয়াশামুক্ত আবহাওয়ায় কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা গেলেও গত বারে একটু আগেভাগেই দেখা দিয়েছিলেন এই পর্বতচূড়াটি। এবার পর্বতচূড়াটি অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে দেখা মিলছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সূর্যের আলোর সঙ্গে মিশে কখনো শুভ্র, কখনো গোলাপি আবার কখনো লাল রং নিয়ে হাজির হয় বরফে আচ্ছাদিত এই পর্বতচূড়া। তবে কাঞ্চনজঙ্ঘা উপভোগ করার মোক্ষম সময় হলো ভোর ও পড়ন্ত বিকেল। ভোরে আলো ফুটতেই তা গিয়ে পড়ে ঠিক কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায়।

এদিকে চারপাশে তখনো আবছা অন্ধকার থাকলেও চকচক করে চূড়াটি। ভোরের আলোয় এবং বিকেলে পর্বতচূড়াটি পোড়া মাটির রং নেয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা ঝাপসা হয়ে আসে। তখন রং হয় সাদা। দূর থেকে মনে হয় এ যেন আকাশের গায়ে একখণ্ড বরফ।