পটুয়াখালীতে ‘ভূমি আন্দোলনের সাথে খাদ্য সার্বভৌমত্বের সম্পর্ক কি?’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

বুধবার (২৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১ টায় পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলার পরিষদের কনফারেন্স রুমে “খাদ্য সার্বভৌমত্বের সাথে ভূমি আন্দোলনের সম্পর্ক কি?” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

দশমিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দশমিনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব মোঃ আবদুল আজিজ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দশমিনা উপজেলা পরিষদ এর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জনাবা সামসুন্নাহার খান ডলি, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ জাফর আহমেদ, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনাব জায়েদ ইকবাল খান, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, বক্তব্য রাখেন কৃষক নেতা আবদুস সাত্তার হাওলাদার, সহ সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, কৃষক নেতা নয়া মিয়া সিকদার, সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক প্রাণ কৃষ্ণ দাস, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, দশমিনা উপ জেলা শাখা, আরো বক্তাব্য রাখেন নারী নেত্রী পিয়ারা বেগম, তহমিনা বেগম, বিউটি বেগম, কৃষক নেতা জয়বাল গাজী, ছোহরাব হোসেন, সহিদ মুন্সি, আলী আকবর, জলিল জোমাদ্দার, মনির হোসেন প্রমূখ।

এসময় বক্তারা বলেন, খাদ্যসার্বভৌমত্ব ধারণাটি একটি আন্তর্জাতিক প্রচার অভিযান। ১৯৯৬ সালে ইতালির রোমে বিশ্বখাদ্য সম্মেলন হতে শুরু হয়। নয়া উদারনৈতিক বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে দুনিয়ার কৃষক সংগঠন আন্তর্জাতিক লা ভিয়া ক্যাম্পেসিনা কর্তৃক প্রথম দুনিয়ার কৃষকদের স্বার্থ,অস্তিত্ব ও জীবন -জীবিকা রক্ষার জন্য খাদ্যনিরাপত্তার ধারণার বিকল্প হিসেবে উত্থাপন করা হয়। খাদ্যসার্বভৌমত্ব আন্দোলন একটি বিশ্ব আন্দোলন।

খাদ্য সার্বভৌমত্বের ধারনার প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ ২০১৮ সালে কৃষক ও গ্রামীণ শ্রমিকদের জীবন জীবীকার ও অধিকারের নিশ্চয়তা বিধান করে একটি ঘোষণা পাস করে। স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার এ ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সরকারকে উল্লেখিত ঘোষণার সাথে সঙ্গতি রেখে নীতিমালা প্রনয়ন করতে হবে যা কৃষকদের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করবে।

তারা বলেন, ইতিমধ্যে আফ্রিকা মহাদেশের মালিতে কৃষিনীতিমালায় খাদ্য সার্বভৌমত্বের নীতিকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। নেপালে খাদ্য ও নিউট্রিশন সার্বভৌমত্বের ধারণাকে দেশের জাতীয় সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে এবং আইন হিসাবে পাশ করার পরিকল্পনা করছে।

খাদ্যসার্বভৌমত্ব বলতে আমরা যা বুঝি তা হচ্ছেঃ ১) ভূমির উপর কৃষকের পূর্ণ অধিকার থাকতে হবে। (২) কি ধরনের ফসল উৎপাদন করবে তার পছন্দের অধিকার কৃষকের থাকতে হবে। (৩) সাংস্কৃতিকভাবে গ্রহনযোগ্য খাদ্য উৎপাদনের অধিকার থাকতে হবে।

১৯৯৭ সালে ভূমিনীতিমালা মোতাবেক প্রতি ভূমিহীন পরিবারকে ১.৫ একর করে খাস জমি দেয়া হয়। এ অল্প পরিমাণ জমি একদিকে যেমন একটি ভূমিহীন পরিবারকে জীবীকার নিশ্চয়তা দেয়। অন্যদিকে তেমনি তাকে মর্যাদার জীবন দান করে।খাদ্যসার্বভৌমত্বের মূল লক্ষ্য যেহেতু জমির মাধ্যমে কৃষকের ক্ষমতায়ন সেহেতু জমির আন্দোলনের সাথে এর নিবিড় সম্পার্ক রয়েছে। এ সম্পর্ককে আরও অগ্রসর করার জন্য একটি সমন্বিত ভূমি সংস্কার তথা কৃষি সংস্কার করতে হবে।

সেমিনারের সভাপতি দশমিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মু. মহি উদ্দিন আল হেলাল বলেন, অবৈধ বন্দোবস্তকৃতদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য অভিযোগ দিলে আমরা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

তিনি আরো বলেন,আপনরা যে কোন বিষয় সরাসরি আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন।সভাপতি অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ দিয়ে সেমিনার সমাপ্ত করেন।