পরিত্যক্ত কূপে গ্যাসের সন্ধান, প্রতিদিন মিলবে ৭ থেকে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস

সিলেটের বিয়ানীবাজারে গ্যাস ফিল্ডের ১টি পরিত্যক্ত কূপ খনন করে গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে এই কুপে গ্যাসের মজুদ থাকার ব্যাপারে নিশ্চিত হয় বাপেক্স। এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ডের পরিত্যাক্ত ১ নম্বর এই কুপ খনন শুরু করে বাপেক্স। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, শীগগির এ কুপ থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হবে। প্রতিদিন এই কুপ থেকে ৭ থেকে ৮ মিলিয়ন ঘন ফুট গ্যাস ও ১ শ ব্যারেল কনডেনসেট সরবরাহ সম্ভব হবে বলে আশাবাদী রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি বাপেক্স।

সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. শাহীনুর ইসলাম এতথ্য নিশ্চিত বাসস’কে বলেন, ‘ আজ বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ডের ১ নম্বর কূপটির পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ হতে প্রায় ২ মাস ১ নম্বর কুপে পুনঃ খনন কাজ চালিয়ে ওই কূপের ৩ হাজার ৪৫৪ মিটার গভীর থেকে পরীক্ষা করে গ্যাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। পরীক্ষামূলক অবস্থায় ১০ মিলিয়ন গ্যাস প্রবাহ হচ্ছে এবং গ্যাসের চাপ রয়েছে ৩ হাজার ১০০ পিএইচ।ওই কূপটিতে আগামী ৩ দিন পরীক্ষা চলবে। পরীক্ষা শেষে তখন এ কূপ থেকে কি পরিমাণ গ্যাস দেওয়া সম্ভব হবে তা নিশ্চিত করা যাবে। তবে, মনে করা হচ্ছে দৈনিক ৭ থেকে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস এবং প্রায় ১০০ ব্যারেল কনডেনসেট সরবরাহ করা যাবে জানান গ্যাস ফিল্ডের ওই কর্মকর্তা।

সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড সূত্রে জানা যায়, সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের অধীন বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রে দুটি কূপ রয়েছে। ১৯৮১ সালে ওই দুটি গ্যাস কুপের খনন কাজ শুরু হলেও ১ নম্বর কূপ থেকে ১৯৯৯ সালে উৎপাদন শুরু হয়। ২০১৪ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। ফের ২০১৬ সালের শুরুতে ফের উৎপাদন শুরু হয়ে আবার ওই বছরের শেষদিকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।

এরপর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকার পর ১ নম্বর কূপে চলতি বছরের ১০ সেপ্টম্বর থেকে আবারও গ্যাসের সন্ধানে খননকাজ শুরু করে রাষ্ট্রয়াত্ত গ্যাস উত্তোলন কোম্পানি বাপেক্স।
এসজিএফএল’র অধীনে থাকা পরিত্যক্ত গ্যাস কূপগুলোর মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কৈলাশটিলা-২, রশীদপুর-২, রশীদপুর-৫ ও হরিপুর-৭ মোট ৪টি কুপ পুনরায় খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের শেষের দিকে ৪টি কূপের খনন শুরু হবে এবং সেখানেও গ্যাস প্রাপ্তির উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রকৌশলী শাহিনুর ইসলাম আরও জানান, ওই কুপে খনন শুরুর আগে ডিপিপিতে ধরা হয়েছিলো এখানে প্রতিদিন ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মিলতে পারে। তবে এখন মনে হচ্ছে আরও বেশিই পাওয়া যাবে। গ্যাসের এ সংকটকালীন সময়ে এটা দেশের জন্য আশির্বাদ বলে তিনি মন্তব্য করেন।
১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান মেলে। এরপর আবিষ্কৃত হয় আরও বেশ কিছু গ্যাসক্ষেত্র। দেশে বর্তমানে ২৮টি আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। এসব গ্যাসক্ষেত্র থেকে বর্তমানে ১১৩টি কূপ দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে। সুত্রঃ বাসস