পাহাড়ে সকল সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেএসএস ও ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধের দাবী

পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল স¤প্রদায়ের নিরাপত্তা, শান্তি, সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে জঙ্গি সংগঠন জেএসএস ও ইউপিডিএফ এর অবৈধ অস্ত্রধারীদের সকল প্রকার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধের লক্ষ্যে দ্রæত চিরুনি অভিযানের মাধ্যমে তাদের সকল অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার পূর্বক পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প পুনঃস্থাপনের দাবিতে এবং বাঘাইছড়িতে সরকারি অফিসে ঢুকে ইউপি মেম্বার বিজয় চাকমাকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি।

এতে যোগ দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ ও রাঙ্গামাটি করাত কল ও কাঠ পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ বহুমূখী সমবায় সমিতি।

রবিবার ২৮ (ফেব্রুয়ারী) সকালে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হওয়া সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহাদাৎ ফরাজি সাকিব এর সভাপতিত্বে ও সিঃ সহ-সভাপতি মোঃ হাবিব আজম এর পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও বাঘাইছড়ি পৌরসভার সাবেক মেয়র আলমগীর কবির।

বক্তব্য রাখেন নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি শাব্বির আহম্মেদ, সিঃ সহ-সভাপতি মোঃ নাদিরুজ্জামান, সহ-সভাপতি কাজি মোঃ জালোয়া, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোলায়মান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোঃ আসাদ উল্লাহ্, যুগ্ন সম্পাদক মোঃ নুরুল আবছার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মামুনুর রশীদ মামুন, প্রচার সম্পাদক মোঃ তাজুল ইসলাম প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তরা বলেন, পার্বত্য এলাকায় জেএসএস ও ইউপিডিএফের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড অব্যাহত রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্তে কিছু দুর্গম এলাকা রয়েছে। পাহাড়ের সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস ও ইউপিডিএফ যে অস্ত্র ব্যবহার করে তা সীমান্তের ওই দুর্গম এলাকা দিয়ে বাহির থেকে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে। সশস্ত্র জঙ্গী সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস ও ইউপিডিএফ বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটাতে ভারী অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছে। জেএসএস ও ইউপিডিএফ এর সশস্ত্র শাখা এক হয়ে জুম্ম লিবারেশন আর্মি গঠন করেছে, তারা এখন ‘সেকেন্ড ফেজ ইনসারজেন্সি’ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অপচেষ্টা করছে।

বক্তারা আরো বলেন, সীমান্তের ওপারে গড়ে তুলেছে ১৪টি ক্যাম্প। দিন যত যাচ্ছে পাহাড়ের সশস্ত্র জঙ্গী সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস ও ইউপিডিএফের অপতৎপরতা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সন্ত্রাসীরা আগের মত এখন আর জঙ্গলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। প্রশাসনের নিরাপত্তা বলয় ভেঙ্গে উপজাতি সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন জায়গায় চালাচ্ছে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা। রেহাই পাচ্ছেনা সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও। পার্বত্য অঞ্চলে বেপরোয়াভাবে সন্ত্রাসীদের উত্থান হলেও এর লাগাম টেনে ধরার জন্য নেই পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বক্তারা বলেন, শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পাহাড় থেকে সেনাবাহিনীর অনেক ক্যাম্প উঠিয়ে নেয়ায় পাহাড়ের আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে। সেনা ক্যাম্প উঠিয়ে নেয়ার সুযোগে পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গুলো এখন নির্দিধায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। সন্ত্রাসীদের ধারাবাহিক হত্যাকান্ডের অংশ হিসেবে বাঘাইছড়ি পিআইও অফিসে ঢুকে সমর বিজয় চাকমা নামের এক ইউপি সদস্যকে গুলি করে হত্যা করে জেএসএসের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। উক্ত হত্যার সাথে জড়িত জেএসএস সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও পাহাড়ের সকল সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অবিলম্বে নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প অধিক হারে স্থাপন করার জন্য দাবী জানান বক্তারা।

সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কাঠালতলী গিয়ে শেষ হয়।