পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় অ্যাম্বুলেন্সে শিশুর মরদেহ রেখে পালালেন বাবা-মা

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় একটি অ্যাম্বুলেন্স থেকে হামজালা (৫) নামে একটি শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এদিকে, পলাতক রয়েছেন শিশুটির বাবা ও সৎ মা।

বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) দিনগত রাত ১২টার দিকে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকা থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

মঠবাড়িয়া পৌরসভার দক্ষিণ বন্দর মহল্লার জুয়েল মোল্লার ছেলে হামজালা। সৎ মা শাহানা বেগমের নির্যাতনের শিকার হয়ে হামজালার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ শিশুটির মা ফাতেমা বেগমের।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক বছর আগে বিয়ে বিচ্ছেদ হয় জুয়েল মোল্লা ও শিশুটির মা ফাতেমা বেগমের। এরপর জুয়েল মোল্লা বিয়ে করেন শাহানা বেগমকে। বিয়ে বিচ্ছেদের পর থেকেই নানীর কাছে বসবাস করতো হানজালা। গত ২৯ মার্চ জুয়েল মোল্লা তার ছেলেকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান।

বুধবার (১৪ এপ্রিল) রাতে অসুস্থ হয়ে পড়ে হানজালা। ওই রাতে তাকে এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান তার বাবা। ওই চিকিৎসক তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়। পরদিন সকালে মেডিকেলে ভর্তি করা হলে রাত ১০টার দিকে মৃত্যু হয় হানজালার।

এরপর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় রাত ১২টার দিকে ওই শিশুর মরদেহ রেখে জুয়েল মোল্লা ও তার সৎ মা পালিয়ে যান। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
এদিকে, হামজালাকে সৎ মা শাহানা মারধর করলে সে অচেতন হয়ে পড়ে এবং পরে হাসপাতালে মারা যান বলে অভিযোগ শিশুর মা ফাতেমা বেগমের।

বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে জানান, রাতে মঠবাড়িয়াতে নিজ বাসায় রোগী দেখেন তিনি। রাতে ওই শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় তার কাছে নেয়া হয়। তাকে ওই শিশুটির বাবা বলেছিলেন, পড়ে গিয়ে সে অসুস্থ হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। শিশুটির মুখে সামান্য আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ জেড এম মাসুদুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে জানান, শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।