পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত অর্ধ শতাধিক

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় যুবদলের কর্মী সভাকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মধ্যে হামলা, ভাংচুর ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় পুলিশসহ অর্ধ শতাধিক আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় কমিটির দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঠবাড়িয়া উপজেলা যুবদলের কর্মী সভা শুরু হয়। এ সময় যুবদল ও ছাত্রলীগের মধ্যে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে বাক বাতন্ডা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার একপর্যায়ে উপজেলা পরিষদের গেটে থাকা বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত একটি ফেস্টুন ম্যুরাল সংঘর্ষ চলাকালীন নিক্ষিপ্ত ইট পাটকেলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

খবর পেয়ে মঠবাড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান মোস্তফা স্বপন ও থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুজ্জামানসহ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে প্রথম পর্যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

নিয়ন্ত্রণে আনার আধা ঘন্টার মধ্যেই আওয়ামীলীগের নেতারা বঙ্গবন্ধুর ফেস্টুন ম্যুরাল ভাংচুরকারীদের গ্রেফতারের দাবী জানাতে থাকে। এর মধ্যে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে বিএনপির অফিস কার্যালয়ে ও বিএনপি নেতা রুহুল আমীন দুলালের বাসভবনে হামলা ও ব্যাপক ভাংচুর চালায়।
এতে রুহুল আমীন দুলাল, কে এম হুমায়ুন কবীর, জসীম ফরাজী, রিপন মুন্সী, খালেদ হাসান বাবু, মাইনুল ইসলাম, রিয়াজ উদ্দিন, মাসুম বিল্লাহ সহ বিএনপি ও যুবদলের বেশ কিছুৃ নেতাকর্মী আহত হয়।
ভাংচুর করা হয় ২শতাধিক চেয়ার, ২টি সাউন্ড বক্স ও ৪টি মাইক্রোফোন সহ ডেকোরেটর ও অন্যান্য আসবাবপত্র।

অন্যদিকে, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেলের আঘাতে জিদান, ইরান, আজাদ, আহাদ আহসান, অলি, প্রণয় হাওলাদার বিকিসহ ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে থানা পুলিশের এস.আই শহিদুল ইসলাম গুরুতর জখম সহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামীলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এমাদুল হক খান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, আওমীলীগ নেতা আরিফ-উল-হক, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান সিফাত ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং প্রশাসনকে সহযোগিতা করেন।

এদিকে, যুবদলের কর্মী সভার নামে সরকার বিরোধী বক্তব্য প্রদান, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভাংচুর ও বিএনপির নাশকতার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা আওয়ামীলীগ।

বিকাল ৪টায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র রফিউদ্দিন আহমেদ ফেরদৌস, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এমাদুল হক খান, উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা শাহ আলম দুলাল, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান সিফাত, বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যাপারে আওয়ামীলীগ এক ও অভিন্ন। কর্মী সভার নামে যুবদল তথা বিএনপি মঠবাড়িয়ায় যে তান্ডব চালিয়েছে আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ২৪ ঘন্টার মধ্যে দোষীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচী দিয়ে মঠবাড়িয়া অচল করে দেওয়া হবে।

যে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে মঠবাড়িয়া পৌর শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও র‌্যাব, ডিবি পুলিশ সহ একাধিক আইন শৃঙ্খলা সংস্থা সর্তক অবস্থায় রয়েছে।

মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদুজ্জামান মিলু জানান, তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় পুলিশসহ উভয় পক্ষের বেশ কিছু নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।