পিরোজপুর-৩ আসনে রুস্তম আলী ফরাজীর গোপন তথ্য ফাঁস করল বক্তারা

পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম শাহনেওয়াজের (কলার ছড়ি) নির্বাচনী পথসভায় ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজীর গোপন তথ্য ফাঁস করে দিয়েছেন বক্তারা।

শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকালে গুলিশাখালী মহিউদ্দিন আহমেদ স্মৃতি সাংসদ সংলগ্ন খোলা জায়গায় এ পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

গুলিশাখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাদলের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মঠবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক,বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমান।

পথসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মঠবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র রফিউদ্দিন আহমেদ ফেরদৌস, দাউদখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক খান রাহাত,বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক চঞ্চল কর্মকার,সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাকসুদা আক্তার বেবী,এ্যাডভোকেট জামাল হোসেন, নুরুজ্জামান তালুকদার,স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম শাহনেওয়াজ,হারুন হাওলাদার, এনামুল হক খোকন,কামাল মিলিটারি, আলফু তালুকদার, নাসির তালুকদার, হারুন অর রশীদ খান (চাক্কা হারুন), তাহেরুন্নেসা বেগম এবং কামাল তালুকদার। সভার শুরুতে পবীত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা কামাল হোসেন এবং পবীত্র গীতা থেকে পাঠ করেন বাবু জ্ঞানেন্দ্র মন্ডল।সভা সঞ্চালন করেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ মাতুব্বর। এ সময় যুদ্ধকালীন আসাদ নগরের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক খান মজনু, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার মাতুব্বর,সাংবাদিক জাহিদ উদ্দিন পলাশ,গুলিশাখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে আজাদ এবি, স্থানীয় ইউপি সদস্য স্বপন তালুকদার,সমাজ সেবক লাভলু জমাদ্দার সহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আশরাফুর রহমান মঠবাড়িয়াকে নিরাপদ মঠবাড়িয়া গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। কোন পরিবার যাতে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে সর্বশান্ত না হয় সেজন্য চেষ্টা করেছি।উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছি। বিনা সুতার মালা গেঁথেছি। সেই বিনা সুতার মালায় হিন্দু – মুসলমান, ধনি-গরিব,আওয়ামীলীগ-বিএনপি কোন ভেদাভেদ ছিল না।

তিনি আরও বলেন, ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজীর সম্বন্ধী ফারুক চেয়ারম্যান একজন চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজ। ইউনিয়ন পরিষদের মামলা চালানোর কথা বলে বিভিন্নজনের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ড্রামের কথা বলে,টিউবওয়েলের কথা বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজীর লোকজন এখন ড্রামের (নিরাপদ পানি সংরক্ষণের ট্যাংক) ব্যবসা করে।

ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজীকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন,একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করতে পারে। নির্বাচন বর্জন করে বলবে- আশরাফুর রহমান সন্ত্রাসী। সে আমাদের নির্বাচন করতে দেয়নি। আপনারা সতর্ক থাকবেন। আগামী ৭ জানুয়ারি কলার ছড়ি মার্কায় ভোট দিয়ে আমার বড় ভাই শামীম শাহনেওয়াজকে জয়যুক্ত করবেন।

রফিউদ্দিন আহমেদ ফেরদৌস বলেন,আপনারা যারা বসে আছেন তারা সবাই কলার ছড়ি মার্কায় ভোট দেওয়ার স্বীদ্ধান্ত নিয়েই এসেছেন। ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজীর সাথে যারা আছেন তারা সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য বানান। তারা মিথ্যার বেসাতি করে চলেছেন।ফরাজীর আমলে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক মুক্তি না হলেও ফরাজীর পরিবারের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। তার বাসায় গেলে দরজা বন্ধ পাওয়া যায়। বাসা থেকে বলে সে অসুস্থ। আসলে উনাকে মানসিক ডাঃ দেখানো উচিত।উনি একজন মানসিক রোগী।উনি অকৃতজ্ঞ। কথা দিয়ে কথা রাখেন না।

রাহাত খান বলেন,আমি ২০ বছর ধরে ইউপি চেয়ারম্যান আর রুস্তম আলী ফরাজীও ২০ বছর ধরে এমপি।উনি সব সময় অসুস্থ থাকেন।কিন্তু নির্বাচনের সময় অসুস্থ থাকেন না।উনি এমপি হয়ে কি করবেন – উনি ২০ বছর ধরে অসুস্থ। দাউদখালী ইউনিয়নবাসী উনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে।রুস্তম আলী ফরাজী কথায় কথায় মিথ্যা কথা বলে।রাস্তার কাজ করলে তাকে ১০% কমিশন দিতে হয়। ১০ লাখ টাকার কাজ করলে তাকে ১ লাখ টাকা দিতে হয়েছে।তার সৎ সাহস থাকলে আমার সাথে এ বিষয়ে সামনাসামনি বলুক।এখন সে নিজে কমিশনের টাকা ধরে না।এজন্য দেখিয়ে দেয় তার স্ত্রীকে।তার স্ত্রী খাদিজা বেগম খুশবু পর্দার অন্তরালে থেকে এখন কমিশন নেয়।

চঞ্চল কর্মকার বলেন,ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী জাপা থেকে মনোনয়ন না পেয়ে গণভবনে গিয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তাকে খালি হাতেই ফিরিয়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন-আপনি ৪ বার এমপি হয়েছেন। একবার উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছেন।আর কত?এবার যান।ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী আওয়ামী লীগের লক্ষ কোটি টাকার টেন্ডার ভাগ করে নিয়ে গেছে। কিছু রাস্তার কাজ আদৌ না করেই বিল তুলে নিয়ে গেছে। ওনার মেয়ের সম্পদের হিসাব নিলেই সব বেরিয়ে আসবে।রুস্তম আলী ফরাজী এমপি থাকাকালীন হিন্দুরা কোন সাহায্য সহযোগিতা পায়নি।নির্বাচন এলেই হিন্দুদের দুয়ারে আশ্রয় নেয়।প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে গুজব উঠিয়ে কয়েকজন হিন্দু দাঁড় করিয়ে টাকা খরচ করে মানববন্ধন করায়।তিনি পূজার সময় শুভেচ্ছা বিনিময় করেন না।এমনকি ঈদের সময়ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন না।কোরবানীর সময় এলাকায় কোরাবানী দেন না।যাকাত দেন না।মেয়ে ও মেয়ের জামাই টেন্ডার ভাগাভাগি করে।শুধু টেন্ডার ভাগাভাগি নয়।মঠবাড়িয়াকে ভাগ করার জন্যও ডিও লেটার দিয়েছে এই ফরাজী।তেলিখালীর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বর্গীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেছে বিশ্বাসঘাতক ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী।